মন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে থানার বড়বাবু। রাজ্যে করোনা সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণে জোর দেওয়া হয়েছে। পরিষেবা সচল রাখতে কড়া নজরদারি রয়েছে প্রশাসনের। এই পরিস্থিতিতে প্রথমবার হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় উঠেছে দেখলেন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক। ধুপগুড়ি হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে এই ছবি দেখে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মন্ত্রী। কারণ টিকা–প্রাপকদের মধ্যে কোনও সামাজিক দূরত্ব নেই। এই অবস্থা দেখে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং ধুপগুড়ি থানার আইসি–কে রীতিমতো ধমকও দিলেন তিনি। এভাবে চলতে থাকলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে বলে তিনি সোচ্চার হন। কেন কোনও নজরদারি নেই তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন।
ঘটনাটি বুধবার ঘটলেও তা জানাজানি হয়েছে বৃহস্পতিবার। স্থানীয় সূত্রে খবর, হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী দেখেন কোন সামাজিক দূরত্ববিধি নেই। অথচ টিকাকরণ চলছে। সেখানে মারাত্মক ভিড় হয়েছে। একই ছবি দেখা যায় কোভিড ওয়ার্ডেও। সেখানে কোভিড পরীক্ষা করাতে আসা রোগীরা সামাজিক দূরত্ববিধি না মেনেই ভিড় করেছেন। এই অবস্থা দেখে জেলা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও ডা. সুরজিৎ ঘোষকে রীতিমতো ধমক দেন মন্ত্রী। এই অব্যবস্থা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকও করেন মন্ত্রী।
এই বিষয়ে মন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক বলেন, ‘মানুষকে সুস্থ থাকতে গেলে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষজন যেভাবে ভিড় করেছে তাতে কোভিড সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমি আজ হাসপাতালের যা পরিস্থিতি দেখলাম, তা যেন আর দ্বিতীয়দিন দেখতে না হয়।’
উল্লেখ্য, চা–বাগানের শ্রমিক ছিলেন একদা। সেখান থেকে লালঝান্ডা হাতে তুলে নিয়েছিলেন বুলু চিক বড়াইক। অধুনা দলবদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে। সেখান থেকেই পরপর দু’বার বিধায়ক নির্বাচিত হন। একুশের নির্বাচনের পর এই প্রথম মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন তিনি। মালবাজারের বিধায়ক বুলু চিক বড়াইকের লক্ষ্য ছিল চা–শ্রমিকদের উন্নয়ন। প্রথমবার মন্ত্রিত্ব পেয়েই করোনা ঠেকাতে মাঠে নেমে পড়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো করোনা মোকাবিলাই এখন প্রধান দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনেই বুধবার হাসপাতাল পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।