বিতর্কের আবহে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৃহস্পতিবার তিনি শান্তিনিকেতনে আসেন। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়–সহ অন্যান্যরা। এখানেই বিতর্ক উস্কে দিল বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব। রাজনাথকে বরণ করতে হাজির হলেন বিজেপির নেতা–কর্মীরা। যা দেখে যারপরনাই ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে প্রবীণ আশ্রমিকরা। বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিকে এভাবে কোনও রাজনৈতিক দল বরণ করতে পারে কি না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। আর তাল কাটল বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ‘ভিসি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দূর হঠো’—স্লোগান লেখা পোস্টারে।
এদিন এই পোস্টার গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে ছেয়ে গিয়েছে। যা চোখে পড়েছে মন্ত্রীর বলে সূত্রের খবর। এমনকী সমাবর্তন বয়কটেরও ডাক উঠেছে। শান্তিনিকেতনের রতনপল্লিতে নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসি–টু’র বিতর্কিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনের কর্মসূচি নিয়েছিল ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। সেটা স্থগিত করা গেলেও উপাচার্যের বিরুদ্ধে তৈরি ক্ষোভ কমানো যায়নি। অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্ক থেকে শুরু করে আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীদের বুড়ো খোকা, অশিক্ষিত বলে মন্তব্য করার রেশে ক্ষোভ এদিন ছিল স্পষ্ট। এই সমাবর্তনে এবার আমন্ত্রণ পাননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নজিরবিহীন।
এদিকে আজ, শুক্রবার দেখা গেল বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে ব্যাপক হারে পোস্টারে পড়েছে। একটি পোস্টারে লেখা—‘বয়কট দ্য পলিটিক্যাল কনভোকেশন’। অন্যটায় লেখা – ‘ভিসি দূর হঠো/ বিদ্যুৎ চক্রবর্তী গো–ব্যাক।’ তবে এসব নিয়েই শুরু হয় সমাবর্তন উৎসব। সামিল হন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। সঙ্গে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে এই সমাবর্তনের সূচনা হয়। যদিও সেখানে ছাত্রছাত্রীদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে এই রাজনৈতিক সমাবর্তন নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে বিশ্বভারতীতে। এই বিষয়ে বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার সাফাই, ‘আমরা রাজনীতিক হিসেবে নয়, বিশ্বভারতীর শুভানুধ্যায়ী হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। পরে রথীন্দ্র অতিথি গৃহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে ফুলের স্তবক ও মা তারার ছবি তুলে দিয়েছি।’ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গৈরিকিকরণ নিয়ে সরব হয়েছে এসএফআই। আর মোদীকে নিয়ে বিতর্কিত তথ্যচিত্র দেখানো না হওয়ায় আয়োজক পড়ুয়াদের পক্ষে শুভ নাথ বলেন, ‘বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ষড়যন্ত্রের কারণে এবং প্রশাসনের চাপে প্রদর্শনী সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। তবে, যথা সময়ে ফের প্রদর্শন করা হবে।’