অনলাইন গেমে মজেছিল নাবালিকা। ‘ফ্রি ফায়ার’ গেমের নেশায় বুঁদ থাকা ওই কিশোরীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল ভিন রাজ্যের একটি চক্রের। তারপরই আচমকা বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায় সে। নিখোঁজ হওয়ার ১ বছর পর উত্তরপ্রদেশ থেকে উদ্ধার করা হল নাবালিকাকে।
সেখান থেকে নাবালিকাকে উদ্ধার করে আনল কালচিনি থানার পুলিশ। আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হলে নাবালিকার জবানবন্দি নেওয়ার পাশাপাশি শিশু কল্যাণ কমিটি মাধ্যমে নাবালিকাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঘটনায় স্বস্তি ফিরেছে নাবালিকার পরিবারের।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আলিপুরদুয়ার জয়গাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওই নাবালিকা অনলাইন গেমে আসক্ত ছিল। সেই সূত্রে বন্ধুত্বের নামে একটি চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে সে। তাকে প্রলোভন দেখিয়ে কোনওভাবে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সেখানকার একটি বাড়িতেই তাকে আটকে রাখা হয়েছিল। তদন্তে নেমে সাইবার ক্রাইম দফতরের সাহায্যে প্রথমে দিল্লি থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ওই নাবালিকার হদিশ মেলে উত্তরপ্রদেশে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই চক্রের মাথাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’ এই অনলাইন গেমের কুপ্রভাব থেকে শিশুদের দূরে রাখার আবেদন জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
২০২০ সালের ২৮ অগস্ট বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় দশম শ্রেণির ছাত্রী (১৬)। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ওই নাবালিকার কোনও সন্ধান না-পেয়ে কালচিনি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিবারের লোকেরা। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তের নামে কালচিনি থানার পুলিশ। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, ওই নাবালিকা অনলাইন গেমের ‘ফ্রি ফায়ারে’ আসক্ত ছিল।
অভিযোগ পাওয়ার পর সাইবার ক্রাইম থানার সাহায্যে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দিল্লিতে অভিযান চালায় কালচিনি থানার পুলিশ। তারপর দিল্লি পুলিশের সাহায্যে পূর্ব দিল্লি থেকে এই চক্রের চাঁই নিক্কেল নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও ওই যুবক এখন জামিনে মুক্ত রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হদিশ মেলে নিখোঁজ নাবালিকার। তারপরে বিভিন্ন মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলার রথ থানা অন্তর্গত টঙা গ্রামে হানা দেয় কালচিনি থানার পুলিশ। সেখানকার একটি বাড়ি থেকে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। বুধবার ওই নাবালিকাকে আলিপুরদুয়ারে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। যদিও সেই সময় পুলিশি অভিযানে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে চক্রের মাথার খোঁজে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।