প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভয়ঙ্করভাবে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গ। সেই আবহে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ও বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় তাঁদের গাড়ি ঘিরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে হামলাই চালানো হয়নি ভাঙচুর, এমনকি শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগও উঠেছে। শঙ্কর ঘোষের অভিযোগ, হামলাকারীরা ‘দিদি দিদি’ বলে স্লোগান তুলে হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে হামলা! রক্তাক্ত হলেন খগেন, আহত শঙ্কর
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, সকাল থেকেই দুই নেতা নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখছিলেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎই কিছু লোক ‘দিদি দিদি’ বলে চিৎকার করতে করতে এগিয়ে আসে। মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা। গাড়ির চারদিক থেকে হামলা শুরু হয়, লাঠি-বাটাম দিয়ে আঘাত হানা হয় তাঁদের কনভয়ে। কাচ ভেঙে যায়, গাড়ির ভিতরেই রক্তাক্ত হয়ে পড়েন সাংসদ খগেন মুর্মু।
বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের শেয়ার করা ভিডিয়োয় দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় রয়েছেন খগেন মুর্মু। তাঁকে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা ‘দিদি দিদি’ বলে স্লোগান তুলছিল। তাঁর দাবি, এটা কোনও স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া নয়, বরং পরিকল্পিত আক্রমণ।
শঙ্করের ভিডিয়ো পোস্টে দেখা গিয়েছে, রক্তাক্ত অবস্থায় গাড়ির মধ্যে বসে আছেন সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর সাদা পাঞ্জাবী রক্তে ভিজে গেছে, ভাঙা কাচে ছড়িয়ে আছে রক্তের দাগ। বিজেপি নেতৃত্ব বলছে, এটা শুধু একটি হামলা নয়, বরং উত্তরবঙ্গে বিরোধী কণ্ঠকে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে বিজেপির অভিযোগ, প্রশাসনের ভূমিকা ‘নিষ্ক্রিয়’। তাঁদের বক্তব্য, উত্তরবঙ্গে বিপর্যস্ত মানুষকে সাহায্য করতে গেলেও বিরোধীদের ওপর এমন হামলা প্রমাণ করে, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। জানা যাচ্ছে, বামনডাঙায় ঢোকার আগে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। লাঠি, জুতো নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হন কয়েকশো মানুষ। নদী থেকে পাথর তুলে তাঁদের গাড়ি লক্ষ করে হামলা চালানো। সেই পাথর লেগে মাথা ফেটে যায় খগেনের। তাঁদের ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। এমনকি, জুতো ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।