শিশুদের হস্তান্তরের সময় চুক্তিপত্র সই করে চলত টাকার লেনদেন? বাঁকুড়ার শিশুপাচার কাণ্ডের তদন্তে নেমে বিস্ফোরক তথ্য উঠে এল সিআইডির হাতে। শিশুপাচার করতে রীতিমতো চুক্তিপত্র সই করে আর্থিক লেনদেন চলত বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
শনিবার বাঁকুড়ার শিশু পাচার কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সতীশ ঠাকুরের বাড়ি থেকে সেই সমস্ত গোপন চুক্তিপত্র উদ্ধার করেছে সিআইডি।
অন্য দিকে, এদিন সিআইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায়, ধৃত ৪ অভিযুক্তকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে, ২ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এই ঘটনায় উদ্ধার হওয়া পাঁচ শিশুর মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষিকার কাছ থেকে যে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটি আদতে রিয়ার সন্তান কি না, তা প্রমাণ করার জন্য আদালতে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদনও জানানো হয়েছে।
এদিন আদালতে মামলা চলাকালীন সরকারি আইনজীবী জানান, ধৃতদের জেরা করে শিশুদের পাচার করার সময় আর্থিক লেনদেনে চুক্তিপত্র ব্যবহারের বিষয় জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। বাঁকুড়ার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমলকুমার রাজোরিয়া-সহ তিন প্রধান অভিযুক্তকে সিআইডি হেফাজতে নিয়ে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। সেখানেই ধৃতদের জেরা করে চুক্তিপত্রে সই করার বিষয়টি উঠে আসে। অর্থিক লেনদেন করতে আদালত থেকে স্ট্যাম্প পেপারে সই করা চুক্তিপত্র তৈরি করা হয়েছিল।অবশ্য তার মধ্যে কি লেখা রয়েছে, তা তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ্যে আনতে চাননি তদন্তকারীরা।
অবশ্য অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী পাল্টা দাবি, সিআইডির আধিকারিকরা চুক্তিপত্রে আর্থিক লেনদেনের কোনও তথ্য খুঁজে পাননি। আইনজীবীর আরও দাবি, পাঁচ শিশুর মা রিয়া বাদ্যকর তাঁর সন্তানদের ভরণপোষণ করতে পারছিলেন না। সেকারণে তিনি তাঁর শিশু সন্তানকে স্কুলের নিঃসন্তান দম্পতি ওই শিক্ষিকার কাছে রেখে এসেছিলেন। সেক্ষেত্রে এখানে কোনও বেআইনি বা আর্থিক লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি।