মালদায় পুকুর থেকে শতাব্দী প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মালদার গৌড় থেকে এই বুদ্ধমূর্তি উদ্ধার হয়েছে। কীভাবে বুদ্ধমূর্তিটি পুকুরে গেল? সে ক্ষেত্রে কী মূর্তি চুরি করা হচ্ছিল, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রত্নতাত্ত্বিক বিচারে এই বুদ্ধমূর্তির গুরুত্ব রয়েছে যথেষ্ট। বৃহস্পতিবার রাতে পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়ার পরেই এই মূর্তি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার রাতে লুকোচুরি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজেদের মূর্তিটি নিজেদের হেফাজতে নেয়। মূর্তি উদ্ধারের পরেই পুলিশ গৌড়বঙ্গ ইতিহাস নিয়ে চর্চা করা বিশিষ্টদের সঙ্গে এনিয়ে আরও বেশি তথ্য সংগ্রহ করতে চায়ছে।ঐতিহাসিকদের অনুমান, মূর্তিটি প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিক ঘোষ নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ার ওই পুকুরে মাছ ধরছিলেন। সেই সময় কোনও একটি ভারী বস্তুর অস্তিত্ব বুঝতে পারেন। এরপরে জাল ফেলে ওই মূর্তি উদ্ধার করেন। বর্তমানে এই মূর্তিটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মালদা মিউজিয়ামে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস গবেষক কৌশিক বিশ্বাস বলেন, নবম থেকে দ্বাদশ খ্রিস্টাব্দে এই মূর্তিটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, পাল সম্রাটরাই এই মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন। কারণ পাল সম্রাটরা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। মূর্তির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, তথাগত যখন বোধি লাভ করেছিলেন তখন কোনও সাক্ষী না থাকায় ধরিত্রীকে সাক্ষী করেছিলেন। এই মূর্তিটি সেটাই বোঝাচ্ছে।
তবে এত পুরনো মূর্তি উদ্ধার হওয়ায় ঐতিহাসিকদের মধ্যে কৌতুহল তুঙ্গে। যে বুদ্ধমূর্তি হয়েছে সেটি ভূমিস্পর্শ বুদ্ধমূর্তি বলে জানিয়েছেন ঐতিহাসিকরা। গৌড়বঙ্গের মধ্যে শুধুমাত্র এই দক্ষিণ দিনাজপুরে বুদ্ধদেবের ভূমিস্পর্শ মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল। তবে মালদায় উদ্ধার হওয়া এই বুদ্ধমূর্তি তার চেয়ে অনেক বড়। ফলে এই মূর্তিটি ইতিহাস চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন ঐতিহাসিকদের একাংশ।