ঘরের এক কোণে বিছানায় পড়ে রয়েছে যুবকের কঙ্কালসার দেহ। মৃত ছেলেকে গ্লুকোজ মেশানো জল খাওয়াচ্ছেন মা। সেই জল মুখের দুপাশ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে ভিজছে বিছানা বালিশ। মায়ের দাবি, ছেলে বেঁচে আছে। জল খাচ্ছে। এখন একটু ঘুমিয়ে পড়েছে এই আরকি। রবিবার রাতে মর্মান্তিক এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা পুরসভা এলাকার চককেন্দুয়ার বাসিন্দারা। দেহ উদ্ধার করে সৎকারে পাঠিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চক কেন্দুয়ায় একটি ঘর ভাড়া করে থাকতেন ৬০ বছরের বৃদ্ধা বকুল সেনগুপ্ত। স্বামী কাজ করতেন কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে। তবে বেশ কয়েকবছর আগে গত হয়েছেন তিনি। ছেলে কৌশিকের (৩৪) সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন মা। দীর্ঘদিন মাদকাসক্তির জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন কৌশিক। শরীরে হাঁড় আর চামড়া ছাড়া কিছু ছিল না। অসুস্থতার জন্য ঘর থেকে বেরোতেন না তিনি। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে বাড়ির ভিতর থেকে সব রকম সাড়াশব্দ বন্ধ হয়ে যায়। বাইরে দেখা যায়নি বৃদ্ধাকেও। এতেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের।
রবিবার রাতে কয়েকজন প্রতিবেশী বাড়িতে ঢোকেন। দেখেন, ঘরের এক কোণে বিছানায় পড়ে রয়েছে কৌশিকের কঙ্গালসার দেহ। আর পাশে বসে চামচে করে মুখে গ্লুকোজ মেশানো জল দিচ্ছেন মা বকুলদেবী। প্রতিবেশীদের তিনি বলেন, ছেলে খাচ্ছিল, কিন্তু এখন ঘুমিয়ে পড়েছে। এর পর চিকিৎসককে ডাকেন স্থানীয়রা। পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিল। ডেথ সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে দেহ সৎকারে পাঠান কাউন্সিলর। তবে বকুলদেবীর দাবি, ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কাউন্সিলর মুকুল মণ্ডল জানিয়েছেন, মাদকাসক্ত কৌশিকের কোনও সরকারি নথি ছিল না। তাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে পারেননি তিনি। চিকিৎসক জানিয়েছেন অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে যুবকের।