ঠাকুর দেখে আর বাড়ি ফেরা হল না। জাতীয় সড়ক হয়ে বাড়ি ফেরার সময় মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল একই পরিবারের তিনজনের। তারা তিনজন হলেন বাবা, মা এবং মেয়ে। এই অবস্থায় উৎসবের মরশুমে বিষাদের ছায়া নেমেছে ওই পরিবারে। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রেজিনগর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায়। মৃত তিনজনের নাম হল- বাবা বিক্রম হালদার (৩৭ ), মা অর্চনা হালদার (৩৪) এবং ১৩ বছরের মেয়ে অনন্যা হালদার। পুজো দেখে ফেরার সময় যে এভাবে তিনটে জীবন।শেষ হয়ে যাবে তা কল্পনা করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: সপ্তমীর দুপুরে পথ দুর্ঘটনা, মৃত্যু শম্ভুনাথ পন্ডিতের চিকিৎসকের স্ত্রী-মেয়ের
জানা গিয়েছে, পরিবারটি রেজিনগর এলাকার বাসিন্দা। তিনজনে মিলে নবমীর রাতে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ ঠাকুর দেখে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। এর জন্য জাতীয় সড়ক ধরে হাঁটছিলেন তারা। সেই সময় ঘটে বিপত্তি। পিছন থেকে কলকাতা শিলিগুড়িগামী একটি বাস এসে পিছন থেকে তাদের সজোরে ধাক্কা মারে। তারফলে তিনজনে অনেকটাই দূরে ছিটকে পড়ে।
এদিকে, ঘটনার সময় রাস্তায় অন্যান্য লোকজনও ছিলেন। তারাও একইভাবে ঠাকুর দেখে ফিরছিলেন। সেই সময় তাদের অনেককেই দ্রুত সেখানে ছুটে আসেন। তবে ততক্ষণে ঘাতকবাস নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় চালক। এরপর স্থানীয়রা তৎপরতার সঙ্গে তিনজনকে উদ্ধার করে দ্রুত বেলডাঙা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় রেজিনগর থানার পুলিশ।
বেলডাঙ্গা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকরা অর্চনা দেবীকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, তখনও বেঁচে ছিলেন বাবা ও মেয়ে। তবে তাদের শাস্তির অবস্থার অবনতি হওয়ায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় তাদের। কিন্তু, সেখানেও তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি।ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে। এদিকে পরে ঘাতক বাসটির খোঁজ পাওয়া যায় বহরমপুরে। সেখান থেকেই বাসটিকে আটক করে থানা নিয়ে যায় পুলিশ।
এর আগের দিন সপ্তমীর রাতে হুগলির পোলবায় বেপরোয়া গতিতে বাইক চালিয়ে দু’টি পৃথক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল তিন যুবকের। মাথাভাঙ্গা-ফালাকাটা রাজ্য সড়কেও প্রাণ হারান এক বৃদ্ধা। জানা যায়, ওই বৃদ্ধা বৃহস্পতিবার রাতে পুজো দেখতে যান। পুজো দেখে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে একটি বাইক তাঁকে সজোরে ধাক্কা মেরে চম্পট দেয়। গুরুতর জখম অবস্থায় বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মাথাভাঙ্গা হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন ঘোকসাডাঙ্গা থানার পুলিশ। পুলিশকে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। তৈরি হয় যানজট। অনেকক্ষণ পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।