পথ দেখিয়েছিল শেখ শাহজাহানের অনুগামীরা। পরে বনগাঁয় শঙ্কর আঢ্যর বাড়িতে ইডি হানার সময়তেও তাঁর অনুগামীরা চড়াও হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের ওপরে। এই দুই ঘটনায় তিনটি এফআইআর রুজু করল সিবিআই। এর মধ্যে দু'টি এফআইআর শেখ শাজহান এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে। অপর এফআইআর হল শঙ্কর আঢ্য এবং অন্যান্য অজ্ঞাত পরিচিতদের বিরুদ্ধে। এদিকে শাহজাহানকে নিয়ে আজ হাই কোর্টে আবারও মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। এর আগে গতকাল সিবিআই-এর হাতে শেখ শাহজাহানকে তুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। (আরও পড়ুন: ‘গোটা বাংলায় সন্দেশখালির ঝড় উঠবে’, মমতার সরকারকে উৎখাতের ডাক মোদীর)
আরও পড়ুন: গঙ্গার তলায় তৈরি হল ইতিহাস, পড়ুয়াদের সঙ্গে মেট্রোয় চাপলেন মোদী, দেখুন ভিডিয়ো
এদিকে গতকাল উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির নির্দেশ অমান্য করেছিল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে পালটা স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য সরকার। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি শোনেনি। সুপ্রিম কোর্টের সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ এই বিষয়টি নিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে যাওয়ার কথা বলেন রাজ্যকে। এই আবহে আজ এই নিয়ে ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। এই পরিস্থিতিতে আজ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানান, আজ বিকেল ৪টে ১৫ মিনিটের মধ্যে সিবিআই-এর হাতে শাহজাহানকে তুলে দিতে হবে সিআইডি-কে।
আরও পড়ুন: মোদীর 'সন্দেশখালি ঝড়'-এর আগেই বড় ঘোষণা মমতার, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি ইডির ওপরে হামলার মামলায় শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে। মাঝের ৫৫ দিন সন্দেশখালির 'বাঘ' নাকি ছিলেন এই রাজ্যেই। এদিকে পুলিশ জানায়, মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল শাহজাহানকে। তবে শাহজাহানকে নিয়ে প্রথম থেকেই চরম গোপনীয়তা রক্ষা করে এসেছে পুলিশ। এই আবহে শাহজাহানকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছিল বসিরহাট মহকুমা আদালতের বিচারক। এরপরই প্রায় গ্রিন করিডর করে শাহজাহানকে ভবানী ভবনে নিয়ে আসা হয়। তবে ইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে সেই মামলার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে যায়। তবে হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও সিআইডি শাহজাহানকে ছাড়তে নারাজ। এই আবহে গতকাল ভবানী ভবনে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয় সিবিআই কর্তাদের। এই সবের মাঝেই হাই কোর্টের তরফ থেকে রাজ্যকে তুলোধোনা করে পর্যবেক্ষণ করা হয়, শেখ শাহজাহানকে আড়াল করার চেষ্টা করার চেষ্টা করছে রাজ্য পুলিশ। আর আজ হাই কোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও এই নিয়ে ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। এরপর হাই কোর্টে দ্বিতীয়বারের জন্য ধাক্কা খেল রাজ্য।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি। সেখানে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। কয়েকদিন পরই সন্দেশখালিতে শাহজাহান, তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবু, উত্তমদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়। সেই শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে সন্ত্রাসের রাজ চালানোর অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধর, হুমকি, অত্যাচার, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল শাহজাহান বাহিনী। পরবর্তীতে উত্তম এবং শিবুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অজিত মাইতিকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে শাহজাহান অধরা ছিল প্রায় ৫৫ দিন। তবে পরে গ্রেফতার হয় শাহজাহান। আর এখন শআহজাহানের হেফাজত নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।