কিছুদিন আগের কথা। সম্ভবত ১২ থেকে ১৪ নভেম্বর তারিখ হবে। মুর্শিদাবাদের অসহায় এক পুরোহিত পরিবারে তাঁর মা মারা যান। তাঁর মোবাইলে থেকে সেদিন একটাই ফোন এসেছিল। ওই পুরোহিতের আর্জি ছিল, ‘আমাদের পরিবারকে বাঁচান।’ সেই ফোন পেয়ে পুরোহিতের বাড়িতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেও তিনি এক ক্যানসার আক্রান্ত পরিবারকে সাহায্য করেছিলেন। এমনকী শিশুকন্যার প্রাণও বাঁচিয়েছিলেন। এবার পেশায় এক দিনমজুরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুর্শিদাবাদের কান্দিতে থাকেন ওই দিনমজুর। যাঁর দুটি কিডনিই খারাপ হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, নিয়মিত বর্ধমানে গিয়ে তাঁকে ডায়ালিসিস করতে হয়। তাঁর কোনও পুত্রসন্তান নেই। দু’জন কন্যা আছেন। তবে তাঁদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ওই দিনমজুরের কাজকর্ম সেভাবে চলছে না। শারীরিক কারণে তা করে উঠতে পারছেন না। সুতরাং আয়ও কম হচ্ছে। এমন অবস্থায় এই কঠিন রোগের চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হওয়া একপ্রকার অসম্ভব। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ে সেদিন ফোন করে সাহায্য চাইলেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের কাছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বন্ধ ট্যুরিস্ট ভিসা, সীমান্তে কমেছে পর্যটকদের সংখ্যা, আমদানি রফতানি বন্ধের মুখে
তারপরই ম্যাজিকের মতো কাজ হল ওই দিনমজুরের জীবনে। আশার আলো দেখতে পেলেন। কারণ ওই দিনমজুরের আর্থিক সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্রুত চিকিৎসা করার জন্য আর্থিক সাহায্যের চেক পৌঁছে গেল ওই দিনমজুরের বাড়িতে। সোমবার ১০ হাজার টাকার চেক পৌঁছেছে দিনমজুরের বাড়িতে। চিকিৎসা যাতে তিনি করাতে পারেন তাই এই আর্থিক সাহায্য। যে চেক হাতে পেয়ে শুধু দু’চোখ বেয়ে জল পড়ছিল ওই দিনমজুরের। কারণ এমনটা যে ঘটবে তিনি ভাবতেও পারেননি। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী বড়ঞা ব্লকের সাহোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনডাঙা গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক ভাল্লা (৫৬) এই সাহায্যে পেয়ে নবজীবনের আশা দেখতে শুরু করেছেন।
এছাড়া এই কার্তিক ভাল্লা একদা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ছিলেন। সংসার চালানোর তাগিদে আর রাজনৈতিক জীবন বেশিদূর এগোয়নি। তবে ভরসা রেখেছিলেন সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই। নবজোয়ার যাত্রার সময় দূরে দাঁড়িয়ে সবটা দেখে ছিলেন দিনমজুর কার্তিক। আর এখন তাঁর এমন অবস্থার কথা জানিয়ে আবেদন করে ছিলেন। আর হাতে হাতে ফল পেলেন। তাঁর বাড়িতে চেক নিয়ে হাজির হলেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মাহে আলম। তারপর অভিষেকের পাঠানো সাহায্য তুলে দেন কার্তিক ভাল্লার হাতে। পাশে থাকার কথাও জানালেন। তাই সব দেখেশুনে দিনমজুর কার্তিক বলেন, ‘এমন সময় এই সাহায্য পেয়ে অনেকটাই সুবিধা হল। ভুল দল যে করিনি সেটা আজ বুঝতে পারলাম।’