ভুয়ো নথি ব্যবহার করা হয়েছিল। আর তা দিয়ে ভোটার কার্ড বানানোর চেষ্টা করেন এক তরুণী। তবে তাঁর ওই কারচুপি হাতেনাতে ধরে ফেলল নির্বাচন কমিশন। এমনকী থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দায়ের করা হয়েছে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে। বহরমপুরের মহকুমাশাসক জানান, ভুয়ো নথি ব্যবহার করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য একটি আবেদন করা হয়েছে। পুলিশ গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। জমা পড়া নথি দেখে সন্দেহ হয় সরকারি কর্মীদের। তথ্য যাচাই করতেই তরুণীর ঠিকানায় যেতেই সব ফাঁস হয়ে যায়। ওই তরুণীর বাবার খোঁজ করতেই ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ে।
সরকারি কর্মীরা ওই তরুণীর দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী পৌঁছতেই সামনে আসে নথিতে বাবা হিসাবে যাঁর নাম দেওয়া হয়েছে, সেই বৃদ্ধই জানালেন, ওই তরুণীর নামই কখনও শোনেননি তিনি। আর ওই বৃদ্ধের যে তিন মেয়ে আছে তাঁদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখন তাঁরা অন্যত্র থাকেন। সুতরাং ওই তরুণী যে ভুয়ো নথি দিয়ে নিজের নামে ভোটার কার্ড বের করে নিতে চেয়েছিলেন সেটা ভেস্তে গেল। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় এই নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিডিও। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, তরুণী নথি হিসাবে যে জন্মের শংসাপত্র এবং আধার কার্ডের প্রতিলিপি জমা দিয়েছিলেন সেই দুটোই ভুয়ো বলে বিডিওকে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: পদ থেকে সরিয়ে দিলেও জেলা সম্মেলনে হাজির সুশান্ত ঘোষ, নিরাপদ দূরত্ব রাখলেন সকলেই
নির্বাচন কমিশনের অফিসাররা ওই দুটি নথি পরীক্ষা করে দেখেন সেগুলি ভুয়ো। তখন সবটা সামনে চলে আসে। হরিহরপাড়ার ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ওই তরুণীর জমা দেওয়া নথি পাঠানো হয়। হরিহরপাড়ার ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ওইরকম কোনও শংসাপত্রই দেননি তাঁরা। তখনই পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয় তরুণীর বিরুদ্ধে। তরুণীর কারচুপি ধরা পড়ে যায়। ওই বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এই বিষয়ে বহরমপুরের মহকুমাশাসক শুভঙ্কর রায় বলেন, ‘ভুয়ো নথি ব্যবহার করে ভোটার কার্ডের আবেদন জানান তরুণী। বিডিও থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’
পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও তরুণীর কোনও হদিশ মেলেনি। যে বৃদ্ধকে বাবা হিসাবে দাবি করেছিলেন ওই তরুণী তিনি নিজের সব নথি দেখিয়ে দিয়েছেন। ওই বৃদ্ধের দাবি, তিনি এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না। স্বরূপপুরের ওই বাসিন্দা জানান, তাঁর তিন মেয়ে আছে। তাঁদের সকলেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অন্যত্র থাকেন। ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ড দুই–ই আছে তাঁদের। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। কেন এমনটা করা হল? ওই বৃদ্ধের যাবতীয় তথ্য তরুণী পেলেন কেমন করে? কী উদ্দেশে এমন করা হল? উত্তর খুঁজছে পুলিশ।