ছাত্রের অপরাধ বলতে স্কুলের পোশাক পরে সে যায়নি। পারিবারিক কারণেই স্কুলের পোশাক পরে যেতে পারেনি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রটি। আর তার জেরে ব্যাপক মারধর করা হয় তাকে বলে অভিযোগ। এই মারধরের জেরে ছোট্ট পড়ুয়ার কোমর ভেঙে যায় বলে অভিযোগ। আর তার জেরে প্রধানশিক্ষকের গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধের ঘটনা ঘটল মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায়। আজ, বুধবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুঙ্গে উঠেছে নিয়ে শোরগোল। কদিন আগে ভগবানগোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া আলামিন হক স্কুলের ইউনিফর্ম পরে যায়নি। তাই প্রধানশিক্ষক নাজমূল হক তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তাতেই ছাত্রের কোমর ভেঙে যায় এবং এখন তার অবস্থা সঙ্কটজনক। তাই প্রধানশিক্ষকের শাস্তির দাবিতে পথ অবরোধ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এখন ছাত্রদের এমন মারধর করার নিয়ম নেই। সেখানে এই ঘটনার পর আলামিনের অভিভাবকরা জানান, ছাত্রের অস্ত্রোপচার করতে হবে। প্রধানশিক্ষক প্রথমে চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাই শুরুতে কিছু টাকা দিলেও মাঝপথে চিকিৎসার খরচ বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন ওই ছাত্রকে মারধরের কথা অস্বীকার করছেন। তাই প্রতিবাদে প্রধানশিক্ষকের গ্রেফতারের দাবিতে ভগবানগোলা নেতাজি মোড়ে পথ অবরোধ করেন স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবকরা। পরে ভগবানগোলা থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে অবরোধ উঠে যায়। তবে ভগবানগোলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রের পরিবার।
আরও পড়ুন: ‘এদের দিয়ে শৌচালয়টাও পরিষ্কার করাবেন’, সুভাষকে কড়া ভাষায় নিশানা করলেন অভিষেক
এই ঘটনা এখন গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তার জেরে বাকি ছাত্রদের অভিভাবক এবং পড়ুয়ারা আতঙ্কে ভুগছেন। অনেকেই স্কুল যেতে চাইছেন না। অন্যান্য অভিভাবক –সহ স্থানীয়রা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। কেন এমন নির্মমভাবে পড়ুয়াকে মারা হল? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকরা। আহত ওই ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ার কথায়, ‘আমি একদিন স্কুলের পোশাক না পরে গিয়েছিলাম। তখন প্রধানশিক্ষক লাঠি দিয়ে খুব মারধর করেন। আমি অনেক দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলাম। এখনও আমি ঠিক মতো হাঁটতে পারছি না। হাঁটলেই পায়ে, কোমরে ব্যথা করছে।’
এই ঘটনায় ছাত্রের পরিবারও কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কারণ শরীর যদি ঠিক না হয় তাহলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। কোমরে চোট পাওয়া ছাত্রের বাবা ইসমাইল হক বলেন, ‘সে দিন বাড়িতে আমার মা মারা গিয়েছিল। তাই ছেলে স্কুলের পোশাক পরে যেতে পারেনি। এই কারণে স্কুলের প্রধানশিক্ষক নাজমূল হক আমার ছেলেকে বেধড়ক মারধর করেছেন। তার জেরে কোমর ভেঙে যায়। প্রথমে চিকিৎসার খরচের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে সেটা পূরণ করেননি। এখন মারধর করার কথাও অস্বীকার করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের এমন অমানবিক আচরণের জন্য প্রধানশিক্ষক নাজমূল হককে গ্রেফতারের দাবি করছি।’