নবগ্রাম থানার লকআপে যুবকের রহস্যমৃত্যুতে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। দু’দিন আগের ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই আবার কাঠগড়ায় উঠল পুলিশের ভূমিকা। এবার বহরমপুরে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ভাগীরথী নদীতে ঝাঁপ দিল এক যুবক। তাতেই তিনি তলিয়ে যান বলে অভিযোগ। ওই যুবকের দেহ রবিবার রাতে উদ্ধার হতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, ছেলেকে আটক করে নিয়ে গিয়ে পুলিশ খুন করেছে। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু তাতে থামছে না ক্ষোভ। গোটা এলাকায় চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে
এই ঘটনা নিয়ে যখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে তখন জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই যুবককে আটক বা গ্রেফতার কোনও কিছুই করা হয়নি। পুলিশের টহলদারি ভ্যান দেখে কেউ যদি নদীতে ঝাঁপ দেয় সেটার দায় পুলিশের উপর পড়ে না। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুলিশের ভ্যান দেখে ওই যুবক ভাগীরথী নদীতে ঝাঁপ দেননি। বরং পুলিশ যখন ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিল তখন ওই যুবক নদীতে ঝাঁপ দেন পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে। এখন সত্য ঘটনা ঠিক কী? তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
ঠিক কী তথ্য দিচ্ছে পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ওই যুবকের নাম অতনু ঘোষ (২০)। যুবক অতনু বহরমপুরের সৈদাবাদ এলাকার বাসিন্দা। আর বহরমপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এই যুবক পুলিশের ভ্যান দেখে ভয় পেয়ে ভাগীরথী নদীতে ঝাঁপ দেয়। তার দেহ পুলিশই উদ্ধার করেছে। কিন্তু পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যাবেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে অতনু স্কুলের মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তখন সৈদাবাদ ফাঁড়ির পুলিশ অতনুকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটক করে। তাঁকে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় ভাগীরথীতে ঝাঁপ দেন অতনু। আর রাতে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। তবে কেন তাঁকে আটক করা হল? তা নিয়ে ধন্দে বাবা নির্মল ঘোষ।
আরও পড়ুন: দক্ষিণরায়দের জন্য তৈরি হচ্ছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, কেন এমন উদ্যোগ সরকারের?
ঠিক কী বলছেন মৃত যুবকের বাবা? অতনুর বাবা নির্মল ঘোষের অভিযোগ, অতনুর বন্ধুদের কাছে থেকে জানতে পেরেছি, পুলিশের হাত বাঁচতেই ভাগীরথী নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন তাঁর ছেলে। আর তাই তিনি তলিয়ে যান। এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে মৃত যুবকের বাবা নির্মল ঘোষ বলেন, ‘দোকান থেকে ফিরে ছেলেকে বাড়িতে দেখতে পাইনি। রাত বাড়লে খোঁজখবর শুরু করি। তখন মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। ফাঁড়িতেও খবর দিই। তখন পুলিশ আমাদের সবটা সাজিয়ে জানায়। দীর্ঘক্ষণ নদীতে তল্লাশি চালিয়ে রবিবার রাতে ছেলের দেহ উদ্ধার হয়। ছেলে যখন ডুবে যাচ্ছিল, তখন পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়। আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে।’ আর বহরমপুরের পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিং বলেন, ‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে পুলিশ অতনু ঘোষ নামে কাউকে গ্রেফতার বা আটক করেনি। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’