ফের একবার আগুন জ্বলে উঠল মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে। এর আগে ধুলিয়ান থেকে কয়েকশো মানুষ ঘরছাড়া হয়েছিলেন হিংসার জেরে। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক হচ্ছিল বলে দাবি করেছিল প্রশাসন। এই আবহে ঘরছাড়াদের বাড়িতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে এরই মাঝে তৃণমূল নেতার দাদার দোকান পুড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। এবিপি আনন্দের রিপোর্ট অনুযায়ী, ধুলিয়ান পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুমিত সাহার দাদা প্রবীর সাহার কসমেটিক্সের দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ধুলিয়ান পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ছিল সেই দোকানটি। (আরও পড়ুন: আপাতত উঠছে না ১৬৩ ধারা, এখনও মুর্শিদাবাদের কোথায় বন্ধ ইন্টারনেট?)
আরও পড়ুন: সৌরভকে নবান্ন অভিযানে আমন্ত্রণ জানাতে গিয়ে থানায় যেতে হল চাকরিহারা শিক্ষকদের
জানা গিয়েছে, দোকানের থেকে মাত্র ৩ কিমি দূরেই অবস্থিত পরবীর সাহার বাড়ি। এই আবহে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি, পুলিশি নজরদারি সত্ত্বেও এই ঘটনা ঘটল কীভাবে? এদিকে ঘরে ফেরার পর ফের নতুন করে সাধারণ মানুষ কোনও হিংসার কবলে না পড়েন, তার জন্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আস্থা ফেরাতে শান্তি কমিটি তৈরি করা হয়েছে মুর্শিদাবাদের গ্রামে গ্রামে। পথসভা করে শান্তির বার্তা দিচ্ছে সেই সব কমিটি। এদিকে ধুলিয়ানের রতনপুর গ্রামে তো বাসিন্দারাই বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করেছেন কোনও ধরনের হামলা রুখতে। (আরও পড়ুন: লাগাতার ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস, জারি সতর্কতা, বৈশাখের শুরুতে কেমন থাকবে আবহাওয়া?)
পরে পুলিশের তরফে সোশ্য়াল মিডিয়ায় এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত বলা হয়, 'সামশেরগঞ্জে নতুন করে হিংসা ছড়়িয়েছে বলে খবর ছড়ানো হয়েছে। তবে তদন্তে নেমে দেখা গিয়েছে, দুর্ঘটনাবশত সামসেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত ধুলিয়ান শহরে একটি দোকানে আগুন লাগে। ঘটনাটি ১৬ এপ্রিলের। এর সঙ্গে হিন্দু মুসলিম সংঘাতের কোনও ইস্য়ু নেই। একেবারে গুজব ছড়াবেন না।'
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ স্থানীয়দের। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এলাকায় এখন বিএসএফ টহল দিচ্ছে। জানা গিয়েছে, সামশেরগঞ্জের রানিপুরের জাফরাবাদে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ, বাবা ও ছেলেকে প্রথমে পেটানো হয়েছে, তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাড়ি ও টোটো। অভিযোগ, পুলিশকে বারবার ফোন করা হলেও পুলিশ আসেনি। (আরও পড়ুন: ওয়াকফ হিংসার জেরে ঘরছাড়াদের অধিকাংশ এখনও মালদা-ঝাড়খণ্ডে, কেমন আছে মুর্শিদাবাদ?)
এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এদিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয় এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলে লুটপাট চালানো হয়। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। হেনস্থা করা হয় বিধায়ককে। জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি এলাকায় টহল দিচ্ছে বিএসএফ।