ডিউটি সেরে ফিরে তাঁবুতে ঘুমোচ্ছিলেন। আচমকাই গুলির আওয়াজ। ঘুমন্ত অবস্থাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দুই জওয়ানের। এদের মধ্যে একজন বাঙালি। বাড়ি হুগলির আরামবাগে। তরতাজা ছেলেকে হারিয়ে শোকার্ত মা।
জানা যায়, পঞ্জাবের পাঠানকোটে মিরথাল ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন গৌরীশঙ্কর হাটি। গত রবিবার ডিউটি সেরে ফিরে আসার পর রাতে তাঁবুতে ঘুমোচ্ছিলেন। আরও কয়েকজন জওয়ান তাঁবুতে ছিলেন। রাতে পাহাড়ার দায়িত্বে থাকা লোকেশ গুলি চালিয়েছে বলে জানা যায়। এই ঘটনার পর পালিয়ে যায় লোকেশ। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গৌরীশঙ্কর ছাড়াও আরও একজন মৃত্যু হয়েছে। এই গুলি চালানোর ঘটনায়। জওয়ানের দেহের ময়নাতদন্তের কাজ হয়ে গিয়েছে। আগামীকাল দেহ আরামবাগে গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছবে। এদিকে অভিযুক্ত সেনাকর্মী লোকেশকে জেরা করছে পুলিশ। জানা যাচ্ছে, এই গুলি চালনার ঘটনার আগে লোকেশের বাড়ি থেকে ফোন এসেছিল। এই ঘটনা ঘটানোর পিছনে কি পারিবারিক অশান্তি কাজ করছে, সেই প্রশ্ন উঠছে।
ছেলের মৃত্যুর খবর পৌঁছনোর পরই শোকের ছায়া নেমে এসেছে আরামবাগের গ্রামে। আরামবাগ পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নির্ভয়পুরের হাটিপুরের বাসিন্দা ছিলেন এই ৩৩ বছরের গৌরীশংকর। পঞ্জাবে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন সেনাকর্মী। তাঁর সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানও থাকতেন। গত রবিবার নির্দিষ্ট সময়ই কাজে যোগ দিয়েছিলেন গৌরীশঙ্কর। নিহত জওয়ানের মা রমা হাটি জানান, ‘পুত্রবধূ আমাকে ফোন করে জানিয়েছিল ছেলে হাসপাতালে ভর্তি আছে। পরে ফোন করে বলছে, ও আর নেই।’ আক্ষেপের সুরেই রমাদেবী জানান, ‘ঘুমন্ত ছেলেটাকে এভাবে গুলি করে মেরে ফেলল।’ জওয়ানের মা জানান, ‘ছেলের খুব আগ্রহ ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। মাধ্যমিক পাশ করার পরই চেষ্টা শুরু করে। ১৮ বছরে চাকরিটা পেয়ে যায়।’ গৌরীশঙ্করের বাবা শান্তি হাটি জানান, ‘ওরা ছয় জন একসঙ্গে ডিউটি করে ফেরেন। তাঁবুর পাহাড়ায় দুজন ছিলেন। এদের মধ্যেই একজন গুলি চালায়।’