কেন্দ্রের তৈরি রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার, কত টাকা দিচ্ছে?

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি টাকা দেয় রাজ্য সরকার। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর নামাঙ্কিত ফলক লাগাতে হয়। সেটা আবার বাধ্যতামূলক। রক্ষণাবেক্ষণের কোনও দিশাই নেই কেন্দ্রায় প্রকল্পের কাছে। তবে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে রাজ্যকে কিছু টাকা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রীয় সরকার নানা প্রকল্পের টাকা বাকি রেখে দিয়েছে। বাংলাকে তা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। বারবার এই অভিযোগ তুলে সংসদে সরব হয়েছেন সাংসদরা। ধরনা থেকে শুরু করে আন্দোলন নানা কাজ করা হয়েছে। তারপরও মেলেনি প্রাপ্য টাকা। আর সেই বকেয়া টাকা রাজ্য সরকার দিয়েছে গরিব মানুষকে। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা যা কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা ছিল তা দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের টাকাও টানা দু’বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এই আবহে রাজ্যের কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে পথশ্রী প্রকল্প চালু করেছে নবান্ন। আর বাংলায় কেন্দ্রীয় সরকার যে রাস্তা তৈরি করেছে তার অবস্থা এখন বেহাল। এবার তার জন্যও বড় পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য বরাদ্দ করলেন এক হাজার কোটি টাকা।

শুনতে অবাক লাগলেও আজ এটাই বাস্তব। আবাস যোজনা, স্বাস্থ্য মিশন–সহ আরও বহু প্রকল্পের টাকা রাজ্যের প্রাপ্য। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সেই টাকা আটকে রাখা হয়েছে। অথচ বারবার কেন্দ্রীয় টিম এসে তেমন কোনও রিপোর্ট পেশ করতে পারেনি বলে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ। সেখানে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ সাহায্যে যে রাস্তায় বাংলায় তৈরি হয়েছে সেটাও তারা মেরামত করেনি। টাকাও দেয়নি মেরামত করার জন্য বলে অভিযোগ। তাই রাজ্য সরকার টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি রাস্তা মেরামত করতে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি টাকা দেয় রাজ্য সরকার। তবে তারপরও প্রধানমন্ত্রীর নামাঙ্কিত ফলক লাগাতে হয়। সেটা আবার বাধ্যতামূলক। অথচ রক্ষণাবেক্ষণের কোনও দিশাই নেই কেন্দ্রায় প্রকল্পের কাছে। তবে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে রাজ্যকে কিছু টাকা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। তারপরও এই খাতের প্রায় ১১০০ কোটি টাকা দিল্লি আটকে রেখেছে বলে সূত্রের খবর।

এই টাকা আটকে রাখার জেরে রাজ্যে আরও প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ বিশ বাঁও জলে পড়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার নিজেদের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে সেই রাস্তা যেখানে প্রধানমন্ত্রীর ফলক রয়েছে তা মেরামত করতে চলেছে। এই বিষয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানান, অযথা রাজনৈতিক কারণেই একাধিক প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। আবাস, ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়ায় বাংলার মানুষকে সেই টাকা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের কোষাগার থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা দিয়ে গ্রামীণ রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে। এবার রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়া ২০২৫–২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে আরও দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নবান্ন। পুরনো রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে অর্থ। বাজেট নথি অনুযায়ী, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জন্য এবার ৪৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রয়েছে। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা এবং গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের টাকায় তৈরি পুরনো রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে দেওয়া হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা।