মালদার হাবিবপুরে চিকিৎসককে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত বিডিওকে সরিয়ে দিল নবান্ন। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন হাবিবুরের অভিযুক্ত বিডিও অংশুমান দত্তের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। তারপরই হবিবপুরের বিডিওকে বদলি করে সাধারণ প্রশাসনের পদ থেকে সরিয়ে রাজ্যের টেকনিক্যাল এডুকেশন, ট্রেনিং অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট দফতরের ওএসডি করা হয়েছে। মালদার জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া এবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, অবিলম্বে ওই বিডিওকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করতে হবে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসককে রাস্তায় ফেলে পেটাল পুলিশ, ভিডিয়ো দেখে স্তম্ভিত সোশ্যাল মিডিয়া
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৯ অগস্ট রাতে। আক্রান্ত চিকিৎসকের নাম দীপাঞ্জন মণ্ডল। তিনি মালদার হবিবপুর ব্লক হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনি অংশুমান দত্তের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ তোলেন। জানা যায়, ওই রাতে বিডিও নিজেই তাঁর স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাবিবপুর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মীদের সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করছিলেন। সেই সময় তিনি ডিউটিতে ছিলেন। বিডিও দ্রুত চিকিৎসার দাবি জানান। এই নিয়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। যদিও বিডিও স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসা করতে চলে আসেন দীপাঞ্জন। কিন্তু, এরপরেই বিডিও তাঁর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পরে বিডিও অংশুমান তার ওপর চড়াও হন এবং মারধর করেন বলে অভিযোগ। তবে চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার পরেও বিডিওর স্ত্রীর চিকিৎসা করেন। শুধু তাই নয়, এর পরে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় এবং মারধর করার চেষ্টা করা হয়।
চিকিৎসক জানান, বিডিওর মারে তিনি আহত হন। তাঁর শরীর থেকে রক্তপাত হয়। বিনা কারণে বিডিও মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেন চিকিৎসক। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে হাবিবপুরে প্রশাসনিক মহলে বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে ঘটনার পরে বিডিওর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানা এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানান আক্রান্ত চিকিৎসক। সাধারণত রোগী পরিবারের বিরুদ্ধে প্রায়ই চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। তবে খোদ বিডিও এমন কাজ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এর পরের দিনই জুনিয়র ডাক্তাররা বিক্ষোভ, কর্মবিরতি করেন। আইএমএ এর প্রতিবাদ জানায়। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের বক্তব্য জানান আইএমএ-র মালদা শাখার সভাপতি তাপস চক্রবর্তী ও সম্পাদক পীযূষ কান্তি মণ্ডল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিডিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। আর তারপরেই সরিয়ে দেওয়া হল বিডিওকে।