তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে বৈষ্যমের অভিযোগ উঠল দলের মধ্যে থেকেই। নদিয়ার চাপড়ায় ওই ইফতারের ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। ইফতারের মেনুতে বৈষম্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রীরা চেয়ারে বসেই ইফতার করেন। আর কর্মী ও সাধারণ মানুষদের জন্য মাটিতে ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়। কর্মী এবং সাধারণ মানুষের পাশে বসে কি নেতারা ইফতার করতে পারতেন না? উঠে যায় প্রশ্ন। এরপর দেখা যায়, মেনুতেও ফারাক। নেতাদের ভোজনে মাংস, কচুরি, নানা ফল, জুস, মিষ্টি রাখা হয়। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী এবং সাধারণ মানুষের প্লেটে লুচি, তারকারি ও ফল। ব্যস এখানেই ধরা পড়ে যায় বৈষম্য।
এদিকে এই বৈষম্য নিয়ে তুমুল শোরগোল পড়ে যায়। এই অনুষ্ঠানের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায়। যার সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। তবে এই নিয়ে নেটিজেনরা সমালোচনায় সরব হয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এই বৈষম্যের কথা অস্বীকার করেছে। এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, ‘স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে দেখা হবে আসলে ঠিক কী ঘটেছে।’ ইফতারে এমন বিভাজন হয়েছে দেখে উপস্থিত দলীয় কর্মীদের অনেকে অপমানিত বোধ করেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: যুবককে উত্তর কলকাতার যৌনপল্লিতে আটকে চলল ব্ল্যাকমেল, মোটা টাকা নিতেই গ্রেফতার
অন্যদিকে চাপড়ার ইসলামগঞ্জ হাই মাদ্রাসার মাঠে ইফতারের আয়োজন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের ব্লক নেতৃত্ব। শনিবার সেখানে চাপড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রুকবানুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বিধায়ক এবং জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আমন্ত্রিত ছিলেন ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের দু’হাজার কর্মী। এই বৈষম্যের বিষয়ে চাপড়া বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক রুকবানুর রহমানের বক্তব্য, ‘এসব বাজে কথা। আমাদের সঙ্গে প্রবীণ মানুষজনও ছিলেন। যাঁরা মাটিতে বসতে পারতেন না। তাঁদের জন্যই চেয়ার রাখা ছিল। আমরা সবাই ইফতার করেছি। যাঁরা এসব প্রচার করছে তাঁরা রাজনৈতিকভাবে আমাদের সঙ্গে লড়াই করতে পারে না।’
এই ইফতার অনুষ্ঠানে রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তারান্নুম সুলতানা মীর, পলাশীপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল কংগ্রেসের শাখা সংগঠনের নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন। জনপ্রতিনিধিরা ওই অনুষ্ঠানে নিজেদের বক্তব্যও রাখেন। এই বিয়ে চাপড়া ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আবদুল লতিফ শেখের কথায়, ‘আমাদের বয়স্ক অতিথিদের জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ইফতারে সবার জন্য একই মেনু ছিল। মাংস ছিল না।’ ইফতারের অন্যতম আয়োজক তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক জানালি মোল্লার দাবি, ‘এমন কিছু ঘটেনি। সবার জন্য সমান আয়োজন করেছিলাম।’