চুরি–ছিনতাই বেড়ে গিয়েছে ধুবুলিয়া, চাপড়া এলাকায়। এখানেই চুরি যাচ্ছিল গয়না থেকে নগদ টাকা সবই। আর একের পর এক এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল বাসিন্দাদের মনে। এমন বিস্তর অভিযোগ সামনে আসায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তদন্তে নেমে উঠে আসে চাপড়া গ্যাং–এর নাম। তারপরই শুরু হয় অভিযান। পুলিশ তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই এই গ্যাংয়ের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে সোনার গয়না এবং মোবাইল।
ঠিক কী এই চাপড়া গ্যাং? পুলিশ সূত্রে খবর, লেখাপড়া না জানা যুবকদের নিয়েই তৈরি হয় এই চাপড়া গ্যাং। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা তিন ভাগে বিভক্ত। একদল চুরি করে। আর একদল ছিনতাই করে। আর তৃতীয় দলটি প্রোমোটারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জমি দখলের কাজ এবং গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত। এলাকায় নিজেদের প্রভাব বোঝাতে সব সময় আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা মজুত করে রাখে তারা। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা গরুপাচার, বিদেশি পাখি পাচার, ফেনসিডিল, আগ্নেয়াস্ত্র এবং সোনা পাচারের সঙ্গে যুক্ত।
কোথায় এই গ্যাং অপারেশন চালাত? সূত্রের খবর, নদিয়ার চাপড়া ব্লকের হাতিশালা ১, হাতিশালা ২ এবং হৃদয়পুর এই তিনটি জায়গাতেই অপারেশন চালাত এই গ্যাং। এই গ্যাংয়ের কমান্ডার–ইন–চিফ আবদুল হামিদ সর্দার। গোটা টিম সে নিজেই তৈরি করেছে। বেকার–অশিক্ষিত যুবকদের নিয়ে এই টিম তৈরি। তাদের মধ্যে থেকেই এক একটি দলকে চুরি, থিনতাই এবং গরুপাচার কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে ব্লক তৃণমূল সভাপতি শুকদেব ব্রহ্মা বলেন, ‘সমাজের চোখে যারা অপরাধী তাদের শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের।’
আর কী জানা যাচ্ছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, চাপড়াতেই অস্ত্র কারখানা গড়ে তুলেছে তারা। আর হেরোইনের ব্যবসাও করে এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। মুর্শিদাবাদ করিডর হয়ে সেটা পৌঁছে যায় চাপড়া গ্যাংয়ের হাতে। তারপর বাংলাদেশে পাচার হয় চুরি–ছিনতাই করা সামগ্রী থেকে আগ্নেয়াস্ত্র। চাপড়া ব্লকের হৃদয়পুর, ভদগাছি, শুটিয়া, ব্রহ্মনগর, হাটখোলা, গুংরা সীমান্তে সক্রিয় গ্যাংয়ের সদস্যরা। তবে চাপড়া গ্যাং নিয়ে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি অমিতাভ কোনার বলেন, ‘চাপড়া এখন একেবারেই শান্ত।’