সোমবারই নদিয়া জেলা ভেঙে পৃথক রানাঘাট জেলা গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পরই শান্তিপুরে দেখা গিয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ। শান্তিপুরের বাসিন্দাদের দাবি, কোনও অবস্থাতেই শান্তিপুরকে রানাঘাট জেলার অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। বৈষ্ণব সাধনমার্গ অনুসারীদের দাবি, শান্তিপুরকে রাখতে হবে নিমাইয়ের জেলা নদিয়াতেই।
সোমবার বেলায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই দলমত নির্বিশেষে পথে নেমেছেন শান্তিপুরের বাসিন্দারা। বর্তমানে শান্তিপুর রানাঘাট মহকুমার অন্তর্গত ও রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অংশ। ফলে নতুন জেলার মানচিত্র অনুসারে নদিয়া থেকে রানাঘাট জেলার অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে শান্তিপুর। কিন্তু তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সেখানকার বাসিন্দারা। শান্তিপুর নদিয়া জেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি তাঁদের। চৈতন্যদেবের ঐতিহ্যধন্য এই ভূমিকে নদিয়া থেকে আলাদা করতে দিতে নারাড তারা।
Kolkata High Court: কেন আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি? বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এসপিকে তলব হাইকোর্টের
এই নিয়ে সোমবার থেকেই শান্তিপুুরে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। শহরের ডাকঘর মোড়ে বিক্ষোভ দেখান বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সেখানে আয়োজিত একটি সভায় সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি পৌঁছে দিতে তৎপর হয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
সোমবার রাজ্যে নতুন ৭ জেলা গঠনের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬ মাসের মধ্যে এই জেলাগুলি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ভেঙে তৈরি হবে সুন্দরবন জেলা। উত্তর ২৪ পরগনা ভেঙে তৈরি হবে বসিরহাট ও ইছামতি (বনগাঁ) জেলা। নদিয়া ভেঙে রানাঘাট জেলা। মুর্শিদাবাদ ভেঙে কাঁদি ও বহরমপুর জেলা। বাঁকুড়া ভেঙে বিষ্ণুপুর জেলা। তৃণমূলের দাবি, মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে ও প্রশাসনিক সুবিধার জন্য এই পদক্ষেপ। যদিও তা মানতে নারাজ বিরোধীরা।
দক্ষিণবঙ্গে গঠিত হতে চলেছে আরও ৭ জেলা, নবান্নে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
বিরোধীদের দাবি, রাজ্য সরকার বারবার বলে পয়সা নেই। অথচ নতুন জেলা গঠন করছে তারা। এতগুলি জেলায় প্রশাসনিক পরিকাঠামো তৈরির পয়সা কোথা থেকে পাবে রাজ্য? বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে রাজ্য সরকার এই কৌশল নিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপের পিছনে রাজনৈতিক কৌশলও দেখতে পাচ্ছে তারা।
তবে নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, জেলা ভাগের জেরে এলাকা পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়ায় কোনও প্রভাব পড়বে না।