স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু তার জেরে পরস্পর আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন সেটা মোটেই স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এমনই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়ায়। যা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। যদিও স্বামীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা আজ, রবিবার তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার কথা জানতে পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্ত্রীও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই স্ত্রীকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনা গোটা পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়ায়।
ঠিক কী ঘটেছে নদিয়ায়? পরিবার সূত্রে খবর, ঠিক একবছর আগে নাকাশিপাড়া থানার বিল্বগ্রামের অমলেশ বৈদ্যর (৩৭) সঙ্গে বিয়ে হয় দীপা দেবীর। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি অমলেশ বৈদ্য। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই অমলেশের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতে শুরু করেন দীপা। যদিও এই সন্দেহ বারবার অমূলক বলেই প্রমাণিত হয়। তবে এই নিয়েই তাঁদের মধ্যে অশান্তি ছিল। শুক্রবার রাতে অমলেশ দেরি করে বাড়ি ফেরে। এই নিয়ে আবার সন্দেহ এবং তা থেকে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছয়। তখন শনিবার অমলেশ বিষ খান। দ্রুত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তর করা হয় কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে। রবিবার মৃত্যু হয় অমলেশের।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই ঘটনার খবর নাকাশিপাড়ার গ্রামে এসে পৌঁছয়। তখন গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। এমনকী গ্রামের অনেকেই চর্চা করতে শুরু করেন, স্ত্রীর অশান্তি থেকে বাঁচতেই স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। এরপর বাড়িতে দেহ পৌঁছয়। তাতে আরও তীব্র হয় শোক। তখন প্রয়োজনীয় নথি আনার নাম করে ঘরে যান মৃতের স্ত্রী দীপা। কিন্তু সেই ঘর থেকে বেরচ্ছেন না দেখে স্থানীয়রা দরজা ঠেলে ঢোকেন। আর দেখেন দীপা দেবীও বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই পরিস্থিতি দেখে মৃতের স্ত্রীকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এই আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে মৃতের ভাই অনিমেষ বৈদ্য বলেন, ‘দাদা–বৌদির মধ্যে অশান্তি ছিল। কিন্তু তার জন্য যে এভাবে ওরা দু’জন আত্মহত্যা করবে ভাবতে পারিনি। বৌদি এখন চিকিৎসাধীন। গোটা পরিস্থিতি তৈরি হয় সন্দেহ থেকে। যার কোনও ভিত্তি ছিল না। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’