বড়মার মন্দিরে সরাসরি পুজো দেওয়ার টোপ। আর এই টোপ দিয়ে দেদার ভক্তদের আর্থিকভাবে প্রতারিত করল এক ব্যক্তি। আর এই অভিযোগ সামনে আসতেই গ্রেফতার করা হল একজনকে। দেশে–বিদেশে নৈহাটির বড়মার লক্ষ লক্ষ ভক্ত। দূরে থেকেও ওই ভক্তরা যাতে সরাসরি বড়মাকে পুজো দিতে পারেন তাই একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছিল মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে। এই তথ্য জানতে পেরে পাল্টা বড়মায়ের নাম ও ছবি দিয়ে একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে ভক্তদের থেকে দেদার টাকা লুঠছিল ওই গুণধর। এই ঘটনায় আজ, শনিবার রিষড়া থেকে সুরজিৎ কুণ্ডু নামে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ এবং একটি ব্যাঙ্কের পাস বই উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ‘ধর্ম হোক যার যার বড়মা সবার’। এটাই লেখা আছে মন্দিরের মাথায়। নৈহাটির মা কালীর নামেই ভক্তি ধেয়ে আসে দেশের গণ্ডি টপকে বিদেশের ভক্তদের কাছ থেকেও। তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখে অ্যাপ শুরু করেছিল কর্তৃপক্ষ। যেখানে ঘরে বসে অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি বড়মার পুজো দিতে পারবেন ভক্তরা। সেখানে এভাবে ছলচাতুরি করে ভক্তদের লুঠছিল অভিযুক্ত সুরজিৎ। তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ, শনিবার ধৃতকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
আরও পড়ুন: ‘জ্যোতিপ্রিয় হলেন দুর্নীতির গঙ্গাসাগর’, জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বলল ইডি
অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে নৈহাটির বড় মায়ের নাম এবং ছবি দিয়ে একটি ওয়েবসাইট খুলে হুগলির রিষড়া থেকে সকলের সঙ্গে পুজো দেওয়ার নামে প্রতারণা করে টাকা তুলছিল এই সুরজিৎ। পুজো দেওয়া থেকে শুরু করে বড়মার মন্দিরে যজ্ঞের নামে তোলা হচ্ছিল দেদার টাকা। বিষয়টি নজরে আসে বড়মা পুজো কমিটি ট্রাস্টের। তারাই তখন দেরি না করে নৈহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল। এই ঘটনা নিয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি নর্থ গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘ধৃত কতদিন ধরে এই প্রতারণা করছিল, কত টাকা প্রতারণা করছে সেটা জানতে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে।’
এছাড়া কয়েকমাস আগেই ‘জয় বড় মা’ অ্যাপ চালু করে নৈহাটি বড়কালী পুজো সমিতি। অনলাইনে অফিশিয়াল এই অ্যাপের মাধ্যমে পুজো দিতে গেলে প্রণামী বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার পুজো সমিতির সম্পাদকের কাছে কানাডা থেকে এক ভক্ত ফোন করে অভিযোগ জানান। তিনি অভিযোগ করেন, ‘অনলাইন পুজো’ নামে একটি ওয়েবসাইটে বড়মার পুজোর নামে ১০০১ টাকা থেকে ৫০০১ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তখন তা খতিয়ে দেখা হয়। এক সদস্য তখন ওয়েবসাইটে থাকা ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে তাঁকে পুজো সংক্রান্ত বিষয় জানতে আর একটি নম্বর দেওয়া হয়। সেই নম্বরে ফোন করতেই ধৃত সুরজিৎ কুন্ডু ফোন তুলে নিজেকে বড়মা ট্রাস্টের সম্পাদক বলে পরিচয় দেয়। তখনই প্রতারণার বিষয় নিশ্চিত হয়ে নৈহাটি থানায় অভিযোগ জানালে রাতেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত সুরজিৎকে।