নৈহাটি বরফ কারখানা থেকে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক হওয়ায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এলাকার বহু মানুষ। অনেকেই ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। তুমুল আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলেই সূত্রের খবর। ওই কারখানা থেকে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক হয়ে এলাকার বাতাসে মিশে যাচ্ছে। নৈহাটির রাজেন্দ্রনগর এলাকায় আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। ওই বিষ বাতাসে শ্বাস নিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এলাকার অনেকে। গ্যাস লিকের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দমকল এবং পুলিশকর্মীরা। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ করছেন তাঁরা।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাত থেকে রাজেন্দ্রনগরের বরফ তৈরির কারখানায় গ্যাস লিক হচ্ছিল। আজ সোমবার সকাল হতেই সেটা বড় আকার নিয়েছে। যার জন্যই অ্যামোনিয়া গ্যাসের বিষাক্ত আবহাওয়ায় মানুষ বিপদ পড়ে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল। ভোররাত থেকে ওইটি বরফ তৈরির কারখানা থেকে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক হয়ে বের হতে থাকে। আর সেই অ্যামোনিয়া গ্যাস কারখানা থেকে এলাকায় ছড়াতেই দ্রুত বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের দ্রুত নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অজগর সাপের টিউমার অপারেশন হয়েছে আলিপুর পশু হাসপাতালে, চিড়িয়াখানায় ফিরল
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, রাজেন্দ্রনগর এলাকা বরফ তৈরির কারখানার ভিতরে অ্যামোনিয়া গ্যাসের একটি ট্যাঙ্ক ছিল। রবিবার মাঝরাতে কোনওভাবে সেই ট্যাঙ্কে ছিদ্র হয়ে যায়। আর তা দিয়েই বিষাক্ত গ্যাস বের হতে থাকে। আর সকালে অ্যামোনিয়ার ‘বিষ’ গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। রাতে অনেকে ঘুমের মধ্যেই বিপদে পড়েন। ওই অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝাল গন্ধে বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়। অনেকের শ্বাসকষ্ট মারাত্মক আকার নেয়। ওই এলাকায় এই ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঝাঁঝাল গন্ধে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পেতে বাসিন্দারা ভিজে কাপড় নাকেমুখে ঢেকে নেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল ও শিবদাসপুর থানার পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রাণহানির আশঙ্কায় ঘরছাড়া হচ্ছেন।
এছাড়া বিপদ অনুভব করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অসুস্থ বেশ কয়েকজনকে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে। ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস লিক বন্ধ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন দমকল কর্মীরা। তবে কারখানার নিরাপত্তা যথাযথ রয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এলাকার বাসিন্দারা কারখানার মালিককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি থামাতে ঘটনাস্থলে আসেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। তিনি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের আশ্বস্ত করেন।