তমলুক, ময়না, কোলাঘাট, নন্দকুমার থেকে হলদিয়া হয়ে নন্দীগ্রাম। এই প্রতিটি জায়গায় এখন পা রাখলে একটা চর্চা কানে আসবে। দাদা কী আর আমাদের রইল না? তাহলে কী নির্বাচনের আগেই মেদিনীপুরের মাটিতে বড় রাজনৈতিক পট–পরিবর্তন দেখা যাবে? এমন নানা প্রশ্ন কানে আসতে থাকবে। কারণ বদলে গিয়েছেন রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। গত কয়েকমাস ধরে দলীয় কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়নি। এই টালমাটাল অবস্থায় তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক ফেসবুক পেজের নামও বদলে গেল। এমনকী তা নিয়ে কোনও সমালোচনাও হল না। নতুন নাম হয়েছে— ‘দাদার অনুগামী কোলাঘাট ব্লক’। বিষয়টা সেক্ষেত্রে দাঁড়াল দাদা নেই ধরে নিয়েই অনুগামী আছে তার প্রমাণ দেওয়া।
সম্প্রতি তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের পর থেকে তৃণমূল থেকে দূরত্ব এড়িয়ে চলছেন শুভেন্দু অধিকারী। অধিকাংশ সরকারি কর্মসূচিতেও যোগ দেননি তিনি। তবে এই জেলায় তৃণমূলের ব্যানারের পরিবর্তে ‘দাদার অনুগামী’ ব্যানারে জেলা ও জেলায় বাইরে সমান্তরাল কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এটা কেন? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরেই। সেখানেও যে তিনি উপস্থিত থাকছেন সবসময় তা নয়। তবু মাঝেমধ্যে আছেন। যাকে কেন্দ্র করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে। আর এটাকেই আরও ইন্ধন জুগিয়েছে, এই নাম বদলের ঘটনা।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর ‘কোলাঘাট ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খোলা হয়। সেখানে ১৩০০ সদস্যের এই ফেসবুক পেজ থেকে কোলাঘাট ব্লকে তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচি ও প্রচার চালানো হত। সেই ফেসবুক পেজটির নাম বদলে রাখা হয়েছে ‘দাদার অনুগামী কোলাঘাট ব্লক’। নাম বদলের পর থেকে ফেসবুক পেজটিতে শুভেন্দুর বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। এখানে অনুগামীরা বেশ সক্রিয় হয়ে দেখা দিয়েছেন।
এখানে অবশ্য তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী এবং অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোষ্ঠী। এই দুই গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে বিরোধ নিয়ে এলাকায় চর্চাও রয়েছে। অসিত, অধিকারী পরিবারের অনুগামী বলেই পরিচিত। ‘দাদার অনুগামী কোলাঘাট ব্লক’ পেজে অসিত অনুগামীরা সক্রিয়। আসলে তিনি যে এখনও তাঁর সঙ্গে আছেন এটা প্রমাণ করতেই এই বদল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তবে এই বিষয়ে তিনি মুখ খোলেননি। এখন দেখার ফেসবুক পেজ বদলের মতোই রাজনৈতিক বদল হয় নাকি!