পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার আবহে বদলে ফেলা হল মাটিগাড়ার ‘পাকিস্তান মোড়’- এর নাম। এই নাম বদলে ‘ভারতমাতা মোড়’ রাখল বঙ্গীয় হিন্দু মহামঞ্চ। সোমবার বিকেলে মাটিগাড়ায় অবস্থিত এই মোড়ের নাম ভারতমাতা নামকরণ করে সাইনবোর্ড লাগায় বঙ্গীয় হিন্দু মহামঞ্চ। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই এই নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। তাছাড়া, গ্রামবাসীদের সঙ্গে এ নিয়ে কোনওরকম পরামর্শ করেনি সংগঠনটি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ বিজেপির মদতে বহিরাগত কিছু যুবক অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে। যদিও বিজেপির দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘পাকিস্তান শান্তি চায়..’, বলেই গালভরা হুমকির বন্যা পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের!
ওল্ড মাটিগাড়া রোডে ২ নম্বর রেলগেট থেকে কিছুটা দূরে এই মোড় অবস্থিত। গ্রামের নাম হল বিশ্বাস কলোনি। ওই মোড়টি বাইপাস মোড় হলেও সেটি অনেকের কাছে পাকিস্তান মোড় হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ, সোমবার বিকেলে কিছু যুবক সাইনবোর্ড নিয়ে গিয়ে ওই মোড়ের নাম বদলে ভারতমাতা মোড় রাখেন। মোড়ের নামকরণের সময় তাঁরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। তাঁদের বক্তব্য, আগে থেকে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। তাছাড়া, ভারতমাতা নামেও আপত্তি জানান স্থানীয়রা। এনিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বচসা বাঁধে।
স্থানীয়দের বক্তব্য, নাম বদলানো নিয়ে তাঁদের আপত্তি নেই, কিন্তু যে পদ্ধতিতে নামকরণ করা হয়েছে, সেটা ঠিক নয়। পুলিশ, প্রশাসন বা পঞ্চায়েতকে কিছু না জানিয়ে বহিরাগত যুবকরা নিজেদের ইচ্ছামতো নামকরণ করেছে। সেটা অবৈধ। এই নামকরণ তাঁদের দায়িত্ব নয়। তাঁদের আরও দাবি, এর ফলে গ্রামে গোলমাল লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বঙ্গীয় হিন্দু মহা মঞ্চের সভাপতি বিক্রমাদিত্য মণ্ডল জানিয়েছেন, আগে ওই মোড়টির নাম ছিল পাকিস্তান মোড়। তাই সেই বদলে ভারতমাতা মোড় করা হয়েছে। তবে এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই বা কোনও অশান্তি তৈরির উদ্দেশ্য নেই। যদি গ্রামবাসীরা মনে করেন এই নাম বদল করা উচিত, তাহলে মুনি ঋষিদের নামে করা যেতে পারে। এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ, বিজেপির মদতে গ্রামে বহিরাগত যুবকরা অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছিল। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
অন্যদিকে, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন জানিয়েছেন, এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। নাম বদলেও দলের আপত্তি নেই। মাটিগাড়ার বিডিও বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন, ওই সংগঠনের তরফে ওই মোড়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে আইন অনুযায়ী, কোনও রাস্তা, মোড় ও গ্রামের নামকরণ করতে পারে পঞ্চায়েত। সংগঠনের তরফে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।