বিরোধী দলনেতার বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রাম। তিনি বাংলার আইনশৃঙ্খলা ও নারীদের সুরক্ষা নিয়ে সুর চড়িয়ে থাকেন রোজই। সেখানে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রেই এক কলেজ ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করল খোদ বিজেপি কর্মীই বলে অভিযোগ। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে নন্দীগ্রামে। টিউশন থেকে কলেজ ছাত্রী যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন পথেই তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। আর তাতে বাধা দিতে গেলে ছাত্রীর বাবাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অভিযোগের তীর বিজেপি কর্মীর দিকে। নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বিরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রং কিনিপুর গ্রামে এখন এটাই চর্চিত বিষয়। নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রীর পরিবার নন্দীগ্রাম থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? এই ঘটনা নিয়ে এখন বেশ চাপে আছে গোটা পরিবার। কারণ অভিযুক্ত একজন বিজেপি কর্মী। আর আক্রান্ত ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, গত ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র দিন সকালে ওই ছাত্রী টিউশন পড়তে গিয়েছিলেন। তার পর পড়া সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ওই ছাত্রী। তখন ওই এলাকারই যুবক তথা বিজেপি কর্মী তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। ছাত্রীর শরীরের নানা জায়গা স্পর্শ করতে থাকে। শুধু তাই নয়, ছাত্রীর স্কার্ট খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। জামাকাপড় ধরেও টানাটানি করতে থাকে।
আরও পড়ুন: চার অস্ত্র ব্যবসায়ীকে তাদের ডেরা থেকে গ্রেফতার করল এসটিএফ, বেআইনি অস্ত্র কারবার ফাঁস
তারপর ঠিক কী ঘটল? কলেজ ছাত্রী বিপদ বুঝে চিৎকার করতে থাকেন। যা শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন তাঁর বাবা। মেয়েকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁর বাবা। প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। এভাবে মেয়েকে বাঁচাতে গেলে অভিযুক্ত ছাত্রীর বাবাকে বেধড়ক মারধর করে মাটিতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনা গ্রামের অনেকেই দেখেছেন। যুবক তথা বিজেপি কর্মীর এই মারধরে ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। তখন তাঁকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, অভিযুক্ত যুবক বিজেপি করেন এলাকায়। আর এসব কীর্তি করেছে।
এই ঘটনায় বেকায়দায় পড়ে গিয়েছে বিজেপি। কারণ নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবারও থানায় ওই যুবক বিজেপি করে বলে অভিযোগ করেছেন। আর এই ঘটনায় ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক হওয়ার জন্যই বিজেপি নেতা এমন অত্যাচার করেছে।’ পাল্টা বিজেপির পক্ষ থেকে জেলা সহ–সভাপতি প্রলয় পালের বক্তব্য, ‘তৃণমূল কংগ্রেস এটা নিয়ে মিথ্যা রাজনীতির করছে। পুরো ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। আমাদের কেউ যদি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে আইন আইনের পথে চলবে।’