আবার নন্দীগ্রামে খুন হলেন একজন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। আসলে পূর্ব মেদিনীপুরের যেখানেই সমবায় নির্বাচন হচ্ছে সেখানেই বিজেপি হারছে। সুতরাং আগের হাওয়া যে নেই সেটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। তারপর থেকেই আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। ঠিক ১৭ দিনের মাথায় আবার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর রহস্যমৃত্যুতে উত্তাল হয়ে উঠল এলাকা। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে নিজের দোকানের কাছ থেকে ওই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই খুনের অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস তুলেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত ওই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর নাম মহাদেব বিষয়ী (৫২)। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের গোকুলনগর পঞ্চায়েত এলাকার বৃন্দাবন চকে থাকতেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ কর্মী হিসাবে কাজ করতেন মহাদেব। তৃণমূল কংগ্রেসের সব কর্মসূচিতেই মহাদেবকে দেখা যেত। বৃন্দাবন চক এলাকায় চা–জল খাবারের দোকান আছে তাঁর। বড়দিনের রাতে দোকান বন্ধ করে ফেরার পথে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় একদল দুষ্কৃতী বলে অভিযোগ। রাতে বাড়ি ফেরায় মহাদেবের খোঁজে বৃহস্পতিবার সকালে দোকানের সামনে যান পরিবারের সদস্যরা। তখন তাঁর রক্তাক্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: একাধিক জেলায় সম্পাদক পদে বদলের ভাবনা, আলিমুদ্দিনের পাখির চোখ বিধানসভা নির্বাচন
মহাদেবের দেহে পা দুটো ভাঙা ছিল। হাতও ক্ষতবিক্ষত ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহ উদ্ধার করে। তখন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এখানে সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু তারপর মানুষের উপকার না হওয়ায় হাওয়া ঘুরতে শুরু করে। সেটা সমবায় নির্বাচনগুলি থেকেই হচ্ছে। তাই খুনের অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস তুলেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘মহাদেব দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে গিয়ে ওঁকে খুন করেছে। কদিন আগে আমাদের দলের আরও এক কর্মীকে খুন করা হয়েছে। দোষীর কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’
একের পর এক সমবায় নির্বাচনে হেরেছে বিজেপি। নন্দীগ্রামেও হেরেছে বিজেপি। তবে ৮ ডিসেম্বর তমলুক সমবায় ব্যাঙ্কের ভোট হয়। সেখানে শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম এক ও দুই নম্বর ব্লকে বিজেপি ১৩টি আসনে জয়ী হতে পেরেছে। সেই জয়ের পরই ভোট পরবর্তী প্রতিহিংসা শুরু হয়। তখন নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের ৭ নম্বর জলপাই গ্রামের বিষ্ণুপদ মণ্ডলের উপর আক্রমণ নেমে আসে। রবিবার রাতে ওই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে হামলা করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তখন তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে উঠেছে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের মারধরে আহত হন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর দাদা গুরুপদও। ঠিক তার ১৭ দিনের মাথায় আবার নন্দীগ্রামে খুন হলেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী।