নন্দীগ্রাম থানা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল সরকার। সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি বৈঠক বসেছিল। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নন্দীগ্রাম থানাকে ‘সেমি আরবান’ মর্যাদা দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র দফতরের থেকে এই প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, রাজ্যর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা নিজেই। তাঁর পেশ করা প্রস্তাবে সায় দেয় মন্ত্রিসভা। এদিকে কেন গ্রামীণ নন্দীগ্রাম থানাকে ‘সেমি আরবান’ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে, সেই বিষয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি। তবে জানা গিয়েছে, ‘সেমি আরবান’ মর্যাদা পাওয়ায় নন্দীগ্রাম থানায় আরও বেশি সংখ্যক বাহিনী থাকবে এবার থেকে।
উল্লেখ্য, বাংলার রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ নাম 'নন্দীগ্রাম'। ২০০৭ সাল থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্ব পেয়ে এসেছে নন্দীগ্রাম। একদা বামেদের এই ঘাঁটি হয়ে উঠেছিল তৃণমূলের গড়। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে হারের সম্মুখীন হতে হয়েছিল খোদ মমতা বন্দ্যপাধ্যায়কে। জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। এদিকে সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রাম ১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপির দাপট অব্যাহত থেকেছে। এদিকে দু’টি ব্লক মিলে মোট ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১১টিই দখল করেছে বিজেপি। এই আবহে নন্দীগ্রামে বিজেপির প্রভাব কমাতে এই থানাকে 'সেমি আরবান' করে বেশি সংখ্যক পুলিশ মেতায়েন করা হচ্ছে বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের।
এর আগে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল নন্দীগ্রাম থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরীকে। তাঁর পরিবর্তে থানা দায়িত্ব পেয়েছিলেন কাশীনাথ চৌধুরী। সেই সময়ও বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, রাজনৈতিক কারণে আইসি বদল করা হয়েছিল। যদিও তমলুক জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) মহম্মদ মইনুল হক জানিয়েছিলেন, মন রায়চৌধুরীর মা অসুস্থ। তাই তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়। পরে পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটতেই ফেরানো হয়েছিল আইসি সুমন রায়চৌধুরীকে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, সুমন রায়চৌধুরীকে ১৫ দিনের ছুটি দেওয়া হয়। যদিও দেখা যায়, ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে দায়িত্বে ফেরানো হয়। এই নিয়ে নানান গুঞ্জন ছড়িয়েছিল সেই সময়। নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক মহলের দাবি ছিল, সুমন রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তিনি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। তাই তাঁকে সরানো হয়েছিল।
এদিকে বর্তমানে নন্দীগ্রাম থানাকে 'সেমি আরবান' করা নিয়ে নবান্ন সূত্রে দাবি, মাঝে মাঝেই এই এলাকায় তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ও পরে এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছিল। এই আবহে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ কমাতেই নন্দীগ্রাম থানাকে 'সেমি আরবান' তকমা দিয়ে সেখানে পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে চলেছে রাজ্য সরকার।