পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে আন্দোলন হয়ে চলেছে দার্জিলিংয়ে। বৃহস্পতিবার নতুন করে আর এক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিল গোর্খা সম্প্রদায়ের দুটি জাতীয় অরাজনৈতিক সংগঠন। এবার গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সবাইকে এক ছাদের তলায় নির্দিষ্ট সংগঠনের মধ্যে এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় গোর্খাল্যান্ড কমিটির (এনজিসি) চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক শক্তি গুরুং এবং ভারতীয় গোর্খা পরিসঙ্ঘের (বিজিপি) সভাপতি শুকমান মোকতান।
১৯৯২ সালের ২০ অগস্ট ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফশিলভুক্ত ভাষার মর্যাদা লাভ করে নেপালি ভাষা। সেই স্বীকৃতিকে উদ্যাপন করতে গোর্খা সম্প্রদায়ের সমস্ত রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের এক ছাদের তলায় আসার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় গোর্খাল্যান্ড কমিটি (এনজিসি) এবং ভারতীয় গোর্খা পরিসঙ্ঘ (বিজিপি)। এক গোর্খা আন্দোলনকারী জানান, বেশ কয়েকটি সংগঠন কয়েক দশক ধরে ভাষা আন্দোলন চালিয়ে গেছে। কিন্তু কেন্দ্র তাদের গুরুত্ব সহকারে তখনই গ্রহণ করে যখন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়।
শক্তি গুরুং বলছিলেন, ‘একতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে সব রাজনৈতিক দল গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানাচ্ছে তাদের লক্ষ্যে মিল থাকলেও পথ আলাদা। সকলেরই যখন উদ্দেশ্য সমান, অর্থাৎ গোর্খাল্যান্ড, তবে সকলকে একসঙ্গে মিলে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। আর সেটা আমাদের এখনই করতে হবে। কারণ, ২০২১–এর বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে দারুণ ফল করতে মরিয়া বিজেপি। আর তা যদি করতেই হয় তবে গোর্খাদের সেখানে একটা বিশাল ভূমিকা থাকতে হবে।’
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সম্পাদক ও গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসনের চেয়ারম্যান অনিত থাপা বলছিলেন, ‘কিছু মানুষ তাঁদের স্বার্থসিদ্ধি করে এর আগে হওয়া গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনগুলির সঙ্গে আপস করেছেন। এবার এই একই দাবিতে যদি কোনও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগঠিত হয় তবে সেগুলিকে এমন ব্যক্তিদের নেতৃত্ব দেওয়া উচিত যাদের রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’
যদিও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানান, গোর্খাল্যান্ডের দাবি রাজনৈতিক। তাই এর জন্য যদি কোনও আন্দোলন হয় তবে সেটির নেতৃত্ব রাজনৈতিক দলেরই করা উচিত। গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের মুখপাত্র মহেন্দ্র ছেত্রী বলেন, ‘২০০৭, ২০১৩ ও ২০১৭ সালে গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানিয়ে গোর্খারা ঐক্যবদ্ধ হয়েও সেই আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছিল। এবার আর একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করার আগে কেন্দ্রের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাগুলি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’