বাংলায় বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১২টি আসন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। গোটা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিক ধরে এখন এনডিএ সরকার গড়ে উঠেছে। রবিবার রাতেই হয়েছে শপথগ্রহণ। আর সেখানেই আবার দেখা গেল শান্তনু ঠাকুরকে। ২০১৯ সালে প্রথমবার জিতে দু’বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল তাঁকে। তারপর ২০২১ সালে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। এবার দ্বিতীয়বার জিতেই এনডিএ মন্ত্রিসভায় আবার ঠাঁই পেলেন শান্তনু ঠাকুর। রবিবার সন্ধ্যায় রাইসিনা হিলসে যে ৭২ জন সাংসদ শপথ নিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন শান্তনুও। নয়াদিল্লিতে শান্তনু শপথ নিতেই বনগাঁয় বিজেপির কর্মীরা রাস্তায় নেমে পড়েন। আর বাজি ফাটতে থাকে। শুরু হয় লাড্ডু বিতরণ।
আসলে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতেই শান্তনুর উপর ভরসা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতেই আবির খেলা হল বনগাঁয়। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, আগে তিন বছর মন্ত্রী ছিলেন শান্তনু। কিছুই করেননি তখনও। তাই আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই। নাগরিকত্বের ইস্যুকে সামনে রেখে লড়াই করেন শান্তনু। তাতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন মতুয়ারা। এবারও দিলেন। কারণ দেশজুড়ে সিএএ কার্যকর হয়েছে। আর তাতেই এবার জিতে সাংসদ হন শান্তনু ঠাকুর। ২০২৬ সালে আবার বিধানসভা নির্বাচন আছে বাংলায়। সেদিকে তাকিয়েই শান্তনুর উপর আস্থা রাখলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে প্রতিমন্ত্রী করেই।
আরও পড়ুন: ‘এটা আমার প্রতীকী প্রতিবাদ’, এনডিএ সরকারের শপথের সময় কালীঘাটে নিষ্প্রদীপ মমতা
এবার দেখা যায়, বেশ কয়েকজন মতুয়া নাগরিকত্বের শংসাপত্র পেয়েছেন। বনগাঁতে সিএএ’র পক্ষেই ভোট দিয়েছেন মতুয়ারা। ৭৩ হাজার ভোটে এবার জয়ী হন শান্তনু ঠাকুর। হেরে যান তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। মতুয়া ভোট ধরে রাখতেই এবারও শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে সেই গুঞ্জন ছিলই। সেটা ঘটতেই বনগাঁর ট্যাংরা এলাকায় বিজেপি কর্মীরা আনন্দে আবির খেলেন। নিজেদের মধ্যে গেরুয়া আবির মেখে আনন্দ করেন তাঁরা। ঠাকুরনগর, গাইঘাটাতেও একই ছবি দেখা যায়। বনগাঁর বাটার মোড়ে রাস্তার ধারে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়েই শান্তনু ঠাকুরের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান দেখেন বিজেপি কর্মীরা।
এছাড়া বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া পথচলতি মানুষকে ও টোটো–অটো চালকদের লাড্ডু বিতরণ করেন। মতুয়ারা ডঙ্কা, কাসি বাজান। বাগদার হেলেঞ্চাতে আতস বাজি ফাটে। এই বিষয়ে বিজেপি প্রভাবিত মতুয়া গোঁসাই বিপ্লব গোঁসাই বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর দ্বিতীয়বার কেন্দ্রের মন্ত্রী হওয়ায় আনন্দ পেয়েছেন সকলে। উনি আমাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য অনেক কিছু করেছেন। আগামী দিনে আরও অনেকেই নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট পাবেন।’ পাল্টা তৃণমূল প্রভাবিত মতুয়া কৃষ্ণ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘শান্তনু ঠাকুর গত পাঁচ বছর সাংসদ ছিলেন। কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলেন তিন বছর। কিন্তু এই সময়ে মতুয়াদের সদস্য পদের জন্য কার্ড করানো ছাড়া কিছুই করেননি। তাই কেন্দ্রের মন্ত্রী হয়েও উপকার হয়নি মতুয়াদের।’