একে করোনার রিপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বেশ কয়েকটি ল্যাবের বিরুদ্ধে। আবার বেসরকারি হাসপাতালের একাংশের বিরুদ্ধেও রোগীদের পরিবারকে বিপুল টাকা বিল ধরানোর অভিযোগও রয়েছে। এরই মধ্যে এবার ভুয়ো নার্সিহোমের পর্দাফাঁস করল ঘটাল প্রশাসন।
হানা দিতেই প্রকাশ্যে চলে এল ভুঁইফোড় নার্সিংহোমের কাণ্ড-কারখানা। তথ্য যাচাই করতে গিয়ে মাথায় হাত তদন্তকারি আধিকারিকদের। তাঁরা জানতে পারলেন, নার্সিংহোমে না কোনও চিকিৎসক রয়েছে, আর নাই কোনও প্রশিক্ষিত নার্স! দু’তিনজন যুবক-যুবতি রমরমিয়ে চালাচ্ছিলেন ভুয়ো নার্সিংহোম! অথচ তাঁদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও প্রশিক্ষণই নেই বলে অভিযোগ। আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, যে রোগীকে করোনা পজিটিভ বলে চিকিৎসা চালিয়ে মোটা অঙ্কের বিল ধরানো হয়েছে, সেই রোগীর করোনা সংক্রান্ত রিপোর্টই নেই।
সোমবার এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটালের কুশপাতা এলাকার একটি নার্সিংহোমে। রোগীর পরিবারকে বিপুল অঙ্কের বিল ধরানোর অভিযোগে এদিন ওই নার্সিমহোমে অভিযান চালান ঘাটাল মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অর্জুন পাল, মহকুমার সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ দুর্গাপদ রাউতও-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ওই নার্সিংহোমে কয়েকজন যুবক-যুবতী বসে রয়েছেন। তাদের কাছে আধিকারিকরা বিপুল অঙ্কের বিল ধরানোর কারণ জানতে চান। এবিষয়ে তারা কোনও সদুত্তর দিতে না পারায়, সন্দেহ হয় আধিকারিকদের। তখন তাঁরা রোগীর করোনা পজিটিভ হওয়ার নথিপত্র দেখতে চান। কিন্তু তাও দেখাতে পারেনি অভিযুক্তরা। এরপর তাদের জেরা করতে শুরু করেন তদন্তকারিরা। তখনই সমস্ত জারিজুরি ফাঁস হয়ে যায়। তদন্তকারী আধিকারিকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের কোনও নথি দেখাতে পারেনি ওই যুবক-যুবতfরা। এরপর নার্সিংহোমের নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল জানান, ওই নার্সিং হোমে থাকা লোকজনকে জেরা করতেই আধিকারিকরা জানতে পারেন, যে করোনা রোগীর কথা নার্সিং হোমের তরফে বলা হচ্ছে, তার করোনা পজিটিভ রিপোর্টই নেই। তাছাড়া ওই নার্সিং হোমে কোনও চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত নার্স নেই। শুধু তিনজন যুবক-যুবতী রোগীদের দেখভাল করছেন। তাদের কারও প্রশিক্ষণও নেই। নার্সিং হোমের বেশকিছু নথি আটক করা হয়েছে। নার্সিংহোমের মালিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।