বর্তমানে পড়শি রাষ্ট্রে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে, সোমবার (২ ডিসেম্বর, ২০২৪) থেকে আর কোনও ট্রাকই আলু নিয়ে বাংলাদেশে যাবে না। প্রকান্তরে বলা যায়, এই সীমান্ত দিয়ে আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য আলুর রফতানি বন্ধ করে দিল ভারত।
হিলি সীমান্ত দিয়ে কীভাবে বন্ধ হল আলুর রফতানি?
এর আগেই খবর এসেছিল, হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আলু রফতানির জন্য ট্রাক বা লরির স্লট বুকিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার অর্থ, নতুন করে সেই বুকিং শুরু না হলে এই এলাকা দিয়ে সীমান্তের ওপারে কোনও আলুর গাড়ি যাবে না।
এদিকে, বাংলাদেশে লাগাতার অশান্তির জেরে গত কয়েক দিন ধরে হিলি সীমান্তে বেশ কিছু পণ্যবাহী ট্রাক আটকে ছিল। যার মধ্য়ে ১৬ থেকে ১৮টির মতো আলুবোঝাই ট্রাকও ছিল।
রবিবার সেই ট্রাকগুলি আলু নিয়ে বাংলাদেশে রওনা দেয়। অর্থাৎ - আপাতত হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আলু নিয়ে যাওয়া এগুলিই হল শেষ ট্রাক।
এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হিলি সীমান্তে এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিনিধি জানান, এদিন যে আলু বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে, তার স্লট বুকিং অনেক আগে করা হয়েছিল। বস্তুত, হিলি সীমান্তে আলুর স্লট বুকিং বন্ধ হয়ে যায় গত ২৭ নভেম্বর। কাজেই এখন আর এই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আলু পাঠানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। যদিও পেঁয়াজ-সহ অন্যান্য পণ্যের রফতানি চলবে বলে জানিয়েছেন ওই প্রতিনিধি।
আলু রফতানি বন্ধের প্রভাব:
বাংলাদেশ বহুলাংশেই ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার উপর নির্ভরশীল। তা সে রোজকার খাদ্যপণ্য হোক, কিংবা বিদ্যুৎ, অথবা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চালানোর জন্য বন্দর।
এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারেরও অজানা নয়। কিন্তু, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে ভারত বিরোধিতা ক্রমশ বাড়ছে। এমনকী, ভারতের জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত অবমাননা করা হয়েছে প্রতিবেশী এই রাষ্ট্রে।
এই প্রেক্ষাপটে আলুর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পণ্য যদি বাংলাদেশকে পাঠানো বন্ধ করে দেয় ভারত, তাহলে তার ফল হবে মারাত্মক। আগেও দেখা গিয়েছে, ভারত থেকে আমদানি করতে না পেয়ে ডিম-সহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম বাংলাদেশে আকাশ ছুঁয়েছে।
বাজার বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিকরা মনে করছেন, হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আলুর রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেদেশে আলুর দাম মাত্রা ছাড়াবে। যার জেরে আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আম-বাংলাদেশিরা।
ইতিমধ্যে যে বাংলাদেশিরা চিকিৎসা করাতে বা অন্য কোনও কারণে ভারতে এসেছিলেন, তাঁরা তড়িঘড়ি স্বদেশে ফেরা শুরু করেছেন। হিলি সীমান্ত দিয়ে আলুর রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর শুনে তাঁরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।