বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারও খোলামেলাভাবে পালিত হবে না বসন্ত উৎসব। শুক্রবার এনিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ বৈঠক করে। তারপরেই এই সিদ্ধান্ত। শুধুমাত্র নিজেদের মধ্যেই এই উৎসব পালন করবেন বিশ্বভারতীর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা। ফলে এবারও বহিরাগতদের প্রবেশের কোনও সুযোগ থাকছে না। এই নিয়ে টানা ৬ বছর ধরে খোলামেলাভাবে বসন্ত উৎসবের আয়োজন বন্ধ রাখল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ‘ওরা বাধা দিয়েছে!’ ঢাকার উত্তরায় হল না বসন্ত উৎসব, এ কোন বাংলাদেশ!
বসন্তের আগমন উদযাপনকারী এই উৎসবটি শেষবারের মতো জনসাধারণের উদ্দেশ্যে উন্মুক্ত ছিল ২০১৯ সালে। গত বছর বসন্ত বন্দনার মাধ্যমে এই উৎসবের আয়োজন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে গত কয়েকবছরের মতো ভিড় এবং নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নিজেদের মধ্যে এই উৎসব পালন করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তে হতাশ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটকেরা। উল্লেখ্য, এ বছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলায় জনগণের জন্য দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল যে বসন্ত উৎসবেও একই উদ্যোগ নেওয়া হবে। শুক্রবার, দীর্ঘ বৈঠকের পর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে এ বছর শুধু প্রতিষ্ঠানের ভিতরে অনুষ্ঠান হবে সেটি জনসাধারণের অনুষ্ঠান নয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ১৪ মার্চ দোল উৎসবের দুদিন আগে ১১ মার্চ বসন্ত উৎসব আয়োজন করা হবে।উল্লেখ্য, শেষবার ২০১৯ সালে খোলাখুলিভাবে বসন্ত উৎসব হওয়ার পর করোনার কারণে ২০২০ সালে বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী এবং বিশেষ আমন্ত্রিতদের মাধ্যমে শুধুমাত্র বসন্ত বন্দনা আয়োজন করা হয়েছিল। তবে গত বছর, প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রথম বসন্ত উৎসবে বহিরাগতদের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বিশ্বভারতীর জনসংযোগ কর্মকর্তা অতিগ ঘোষ বলেন, ‘সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ১১ মার্চ বসন্ত উৎসব আয়োজন করা হবে এবং শুধুমাত্র ছাত্র, শিক্ষক, প্রাক্তন ছাত্র এবং আশ্রমিকরা এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনকারী সংস্থা কর্মী মণ্ডলীর যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস রায় বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা বসন্ত উৎসব আয়োজন করব এবং এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে না। এটি ১০ মার্চ সন্ধ্যায় শুরু হবে। ১১ মার্চ শান্তিনিকেতন বাড়ি থেকে মিছিল শুরু হবে এবং গৌর প্রাঙ্গণে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বভারতী পরিবারের কেউই বসন্ত উৎসবকে জনসাধারণের অনুষ্ঠান হিসেবে আয়োজন করতে চায় না। এতে প্রায়ই নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে।’ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্য অনিল কোনার জানিয়েছেন, এটি বিশ্বভারতীর নিজস্ব উৎসব। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেভাবে ইচ্ছা বসন্ত বন্দনা আয়োজন করতে পারে।