প্রয়াত পিতা আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী প্রতীচী বাড়ির সম্পূর্ণ জমি নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের নামে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের রেকর্ড করা আছে। কিন্তু তারপরও অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আর তা নিয়ে তিনি তিতিবিরক্ত। তাই এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে পাল্টা চিঠি দিলেন অমর্ত্য সেন। অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর ‘জমি দখল’ করে বসবাস করছেন অভিযোগ তুলে তাঁকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে ‘অযথা বিব্রত করা হচ্ছে’ বলে পালটা চিঠি দিলেন তাঁর আইনজীবী। এমনকী ২৯ মার্চ বিশ্বভারতীর শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারছেন না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাহলে কবে সশরীরে মিলবে অমর্ত্য সেনকে? নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী চিঠি পাঠিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, ‘বিশ্বভারতী শোকজ করেছে। তাই বিশ্বভারতীর জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসার যে নোটিশ দিয়েছেন, তার প্রেক্ষিতে সময়ের আবেদন করেছি। অনিবার্য কারণবশত জমি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি যদি কিছু থেকে থাকে, তা না পাওয়া পর্যন্ত জবাব দিতে পারছি না বলে চিঠি লিখেছি। আর চার মাস সময় চেয়েছি। জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রিসিভ হয়েছে বলে শুনেছি। প্রতিলিপি পাইনি।’
আর কী জানা যাচ্ছে? অমর্ত্য সেন ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন বলে একাধিকবার অভিযোগ তুলেছে বিশ্বভারতী। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে উচ্ছেদ নোটিশও ধরিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে আসছে, ১৯৪৩ সালে অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেনকে কখনওই ১.৩৮ একর জমি লিজ দেওয়া হয়নি। ১.২৫ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। তাই বিশ্বভারতী অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ১৩ ডেসিমেল জমি দখলের অভিযোগ করেছে। এই বিতর্কের মধ্যেই অমর্ত্য সেনের নামেই মিউটেশন হয়ে যায় ১.৩৮ একর জমি। তাই উচ্ছেদের নোটিশ কার্যত অর্থহীন হয়ে পড়েছে। তবুও সৌজন্য দেখিয়ে উচ্ছেদ নোটিশের পাল্টা চিঠি দেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবী।
কোথায় গিয়ে দাঁড়াল বিষয়টি? সম্প্রতি শান্তিনিকেতনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করেন। আর অর্থনীতিবিদের হাতে জমির মাপজোক সংক্রান্ত কাগজপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী নিজেই বিএলআরও অফিসে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জমির মিউটেশনের কাগজও অর্থনীতিবিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে কোনও মানুষকে অপমান করা যায় না।’