কোভিড সংক্রমণের কারণে যে সমস্ত সংস্থা চিন থেকে পাততাড়ি গোটাতে ইচ্ছুক, তাদের উত্তরবঙ্গে জায়গা দেওয়া হোক। এমনই মনে করছেন স্থানীয় শিল্পপতিমহল।
তাঁদের মতে, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে অসম, ভূটান ও সিকিমের সীমান্ত রয়েছে, এবং ওই দুই রাজ্যের সঙ্গে রয়েছে চিনের সীমান্ত। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গেও সীমান্ত ভাগ করার দরুণ উত্তরবঙ্গে শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা প্রবল। এই কারণে শিল্পমহলের দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।
এই বিষয়ে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন কোচ বিহার জেলা চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্র কুমার বৈদ। তাঁর দাবি, ‘অএনেক সংস্থাই নিরাপদ বোধ করছে না বলে চিন থেকে সরে আসতে চাইছে। ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানের অনেক সংস্থার নজরে ভারতই পরবর্তী গন্তব্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কিছু সংস্থাকে আমরা কোচ বিহারে আমন্ত্রণ জানাতে পারি। এখানে তোর্সা নদীর তীরে প্রায় ২০০০ একর ফাঁকা সরকারি জমি অব্যবহার্য হয়ে পড়ে রয়েছে।’
তাঁর মতে, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সমগ্র ভারতের রেল, বিমান ও সড়কপথে যোগাযোগ রয়েছে। এ ছাড়া মায়ানমার-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য রয়েছে এশিয়ান হাইওয়েজ নেটওয়ার্ক।
কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি নর্থ বেঙ্গল চ্যাপ্টার-এর চেয়ারম্যান সঞ্জিত সাহা জানিয়েছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের চোখে ভারত এখন নতুন আশার আলো হয়ে উঠেছে এবং উত্তরবঙ্গের সেই ক্ষমতা রয়েছে। সস্তায় জমি ও শ্রমিক পাওয়ার ফলে এই অঞ্চল শিল্প গড়ে তোলার পক্ষে অতি সহায়ক। এই বিষয়ে আমরা পশ্চিমবঙ্গ ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে চিঠি লিখব।’
তবে একাধিক দেশে ব্যবসা চালানো শিলিগুড়ি পিসিএম গ্রুপ অফ কম্পানিজ-এর ডিরেক্টর নিরঞ্জন মিত্তলের মতে, চিন থেকে সমস্ত বিদেশি সংস্থার ভারতে সরে আসার বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবার সময় আসেনি। তবে এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গে শিল্প গড়ে ওঠার বড় সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘যে সমস্ত সংস্থা উত্তরবঙ্গে বিনিয়োগ করতে চায়, তাদের আমরা জমি দেব। এই অঞ্চলে পর্যাপ্ত জমি ব্যাঙ্ক রয়েছে এবং আবহাওয়াও চমৎকার। এ ছাড়া এখানে ফল ও খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার বেশ কিছু প্রাকৃতিক সুবিধা পাওয়া যায়।’