হাতে গোনা কয়েক মাস পরই বর্ষা আসবে বঙ্গে। আর তার জেরে বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে উত্তরবঙ্গে বলে আশঙ্কায় রয়েছে রাজ্য সরকার। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ করতে অগ্রিম তৎপর হল রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সেচ দফতর। তাই ৩৮ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করল নবান্ন। মোট ৮টি জেলার জন্য এই বিপুল পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মালদায় গঙ্গা নদীর ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সবচেয়ে বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলায় তিস্তা নদীর ভাঙন ঠেকাতেও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৫–২৬ অর্থবর্ষে এই টাকা দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যে বর্ষা আসার আগে দুর্যোগ ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতির জন্য মোট ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সেচ দফতর। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৮ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। সেচ দফতর সূত্রে খবর, এই টাকায় নদী ভাঙন ঠেকাতে বোল্ডার, নেটের তার, বাঁশ–সহ নানা ধরণের জিনিস দিয়ে মজুত করতে বলা হয়েছে। বৃষ্টির জমা জল দ্রুত বের করার জন্য স্লুইস গেটগুলিকে পরিষ্কার রাখার কথা বলা হয়েছে। বর্ষার জল যেন জমে না থাকে। সেটা যাতে দ্রুত বেরিয়ে যায় তার জন্য নদীবাঁধে রেইনকাট মেরামত, নদীতট এবং সেচখালগুলিকে পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বামীর প্রেমিকা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করল বধূকে, ঘুটিয়ারি শরিফে গ্রেফতার যুবতীর সঙ্গী
দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলাও বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। সেগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর উত্তরবঙ্গের মালদা, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা রয়েছে সেচ দফতরের উত্তর বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের আওতায়। এই বিভাগ এখন মালদার গঙ্গাভাঙন, বাঁধের মেরামতি–সহ যাবতীয় কাজ করবে। এমনই নির্দেশ এসেছে। আর তার জন্যই ২৮ কোটি টাকা এখন বরাদ্দ করা হয়েছে। এই টাকা দিয়ে মহানন্দা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ করার কাজও করতে হবে। তার সঙ্গে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকা আছে সেচ দফতরের উত্তর–পূর্ব বিভাগের অধীনে।
২০২৪ সালে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়েছিল উত্তরবঙ্গকে। কখনও অতিবৃষ্টিতে বানভাসী অবস্থা, চার জেরে ধস নেমে বিপত্তি এবং সিকিমের লেক বিপর্যয়ের পর চুমুকডাঙ্গি লালটং, টটগাঁও, ওদলাবাড়ি, ক্রান্তি, দোমোহনি, মিলনপল্লি এবং বীরেন বস্তির মতো এলাকাগুলি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বন্যাপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে কিছু এলাকা। এই সমস্ত এলাকার প্রতি বিশেষ নজর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলায় ৩৭,৬৬০ বর্গ কিলোমিটার বন্যা প্রবণ এলাকা রয়েছে। তবে ১১১টি ব্লকে। রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বন্যায় বেশ কয়েকবার প্রভাবিত হয়েছে দু’হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা।