নদী সংস্কার, বাঁধ মেরামত এবং খনন কাজ শুরু করতে চলেছে সেচ দফতর। কারণ এই কাজ না হলে প্রবল বর্ষায় মানুষের জীবন–জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে। উত্তরবঙ্গে এবার ২০টি নদীর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা চাইল সেচ দফতর। এই টাকা দিয়েই নদীর কাজ করা হবে। কারণ চলতি বছরের বর্ষা এখনও শেষ হয়নি। দুর্গাপুজোর আগে–পরে আবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই বছরও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেগুলির মূল্যায়ন করে ২০২৫ সালে ২০টি নদীর বাঁধ থেকে শুরু করে সংস্কার এবং করতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বরাদ্দ চেয়ে পাঠাল সেচ দফতরের উত্তরপূর্ব বিভাগ।
বারবার দেখা গিয়েছে, প্রবল বর্ষায় নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত করে দেয়। তাই তিস্তা–সহ একাধিক নদী খনন করতে ৬০০ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো রয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। তারই মধ্যে ২০০ কোটির প্রস্তাবও আছে। এবার সে টাকা পেলেই কাজ শুরু হবে। কিন্তু যদি প্রস্তাব অনুযায়ী বরাদ্দ না মেলে তাহলে অতিভারী বৃষ্টিতে সহজেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সেচ দফতর সূত্রে খবর. এখনও পর্যন্ত ৫ কোটি টাকার অনুমোদন মিলেছে। ২০২৩ সালে সিকিমের বিপর্যয়ের পরে তিস্তার নদীর খাত উঁচু হয়ে গিয়েছে। সেটাই চিন্তা বাড়িয়েছে সেচ দফতরের। তাই দ্রুত বরাদ্দ চাইছে সেচ দফতর।
আরও পড়ুন: মাওবাদীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে খুলে গেল স্কুল, দু’দশক পর ছত্তিশগড়ে এল শিক্ষার আলো
এই কাজ যে করা হবে তা আগেই জানিয়েছিল সেচ দফতর। এই নিয়ে আলোচনাও হয় বিস্তর। তারপরই সবদিক বিবেচনা করে মোট ৬০০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এই টাকা একবারে দেবে না রাজ্য সরকার বলে সূত্রের খবর। কারণ চলতি বছরের শেষে গ্রামীণ মানুষদের আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা দিতে হবে। তাই নদীর ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই বিষয়ে সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার (উত্তর পূর্ব) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ‘নদীবাঁধ এবং নদী পাড়ের মেরামত নিয়ে আগে থেকেই সমীক্ষা চলে। তারপর রিপোর্ট তৈরি হয়। আর প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়। আমরা উত্তরবঙ্গের ২০টি নদীর জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।’
উত্তরবঙ্গের তিস্তা নদী বর্ষায় একটা বড় সমস্যা। তার সঙ্গে তোর্সা, মহানন্দা, জলঢাকা, সঙ্কোশ, রায়ডাক, মানসাই, কালজানির মতো বন্যাপ্রবণ নদীগুলির জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আর এই নদীগুলিকে সামনে রেখে ১২২টি প্রকল্প তৈরি করেছে সেচ দফতর। সেচ দফতর সূত্রে খবর, ২০২৪ সাল থেকেই এই কাজগুলি শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সিকিমের বিপর্যয়ের পর থেকে তিস্তা নদী অনেকটাই উঁচু হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য নদীতেও পলি জমে খাত উঁচু হয়ে গিয়েছে। বিপদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই এখন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পাড় মেরামতি শুরু না করলে পরের বছর বর্ষায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।