আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তারপরই এই হাসপাতালের দুর্নীতি সামনে এসেছে। এমনকী দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। ইডি হানা দিতে শুরু করেছে তাঁর বাড়িতে। এই আবহে এবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আর এই অভিযোগ তুলছেন প্রাক্তনী এবং এখনকার জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাক্তনীদের মতে, হাসপাতালের ডিনের পদত্যাগ দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। দুর্নীতি চক্রের যারা মাথা তাদের পদত্যাগ করতে হবে। এই নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দুর্নীতির পাশাপাশি থ্রেট কালচারকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার নম্বর বাড়ানো, পাশ করিয়ে দিতে টাকা নেওয়া–সহ বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর তার জেরেই আন্দোলন শুরু করেন পড়ুয়ারা। এই আন্দোলনে চিকিৎসকদের একাংশ পড়ুয়াদের পাশে রয়েছেন। পড়ুয়াদের ক্ষোভের মুখে পড়ে ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত এবং সহকারী ডিন সুদীপ্ত শীল ইস্তফা দিয়েছেন। এই ঘটনার পর পড়ুয়াদের একাধিক অভিযোগের তদন্তে কমিটি গঠন করেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ। তবে এঁরা সন্দীপ ঘনিষ্ঠ কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট হয়নি। এই নিয়ে অভিযোগও ওঠেনি।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম–এগরায় সমবায় নির্বাচন ব্যাপক জয় তৃণমূল কংগ্রেসের, ধাক্কা গেরুয়া শিবিরে
এখানে যে তদন্ত কমিটি তৈরি হয়েছে তার মাথায় রয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপাল সঞ্জয় মল্লিক। আরও অন্য একাধিক বিভাগের প্রধানরা রয়েছেন এই কমিটিতে। তবে কমিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখার কাজ কতটা নিরপেক্ষভাবে করতে পারবে সেটা নিয়ে চিকিৎসকদের একাংশ সন্দিহান রয়েছেন। আর পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, অনেক বিভাগীয় প্রধান কলেজের পরীক্ষায় নম্বর বাড়ানোর ‘দুর্নীতিতে’ জড়িত। এই আন্দোলন–বিক্ষোভের ফলে এখানে চিকিৎসার ক্ষেত্রের অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। যদিও একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। একমাসে পেরিয়ে গেলেও আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে জাস্টিস আসেনি।
আজ, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর হাসপাতাল মামলার শুনানি রয়েছে। যেখানে তাকিয়ে গোটা দেশ। এই আবহে উত্তরবঙ্গ হাসপাতালের দুর্নীতি নিয়ে একমত প্রাক্তনীরা বলে জানা যাচ্ছে। রবিবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করেন এই প্রাক্তনীরা। প্রাক্তনী ভাস্কর রায় বলেন, ‘যে সব অভিযোগ এখানে উঠছে, তার যদি সঠিক তদন্ত করতে হয়, তা হলে সমস্ত পদাধিকারীদের পদত্যাগ করতে হবে। তার পর সেখানে স্বচ্ছ তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত। এক্ষেত্রে ডিন বা প্রিন্সিপাল বলে নয়, গোটা চক্রের মাথাদের সরিয়ে দিয়ে তদন্ত করা উচিত বলে আমার মনে হয়। আমরা অসুস্থ ডাক্তার চাই না।’