প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং প্রকৃতির রুদ্রমূর্তি ধারণ করার ফলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গ। নাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় ব্যাপক ধস নেমেছে পাহাড় থেকে সমতলে। সিকিম, মিরিক, কালিম্পংয়ের ধসে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। বিপর্যস্ত সিকিমের লাইফলাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মিরিকে ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিকে এখন টানা বৃষ্টি হবে। তাই সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তিস্তা বাজার থেকে কালিম্পং পর্যন্ত রাস্তাও বন্ধ। ফুঁসে উঠেছে তিস্তা। দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে জোর ধাক্কা খেল পর্যটন। এবার এই আবহে উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরে প্রবল বৃষ্টির জেরে দার্জিলিংয়ে–সহ নানা জায়গায় নেমেছে ধস। সমতলের নদীতে জলস্তর বেড়েছে।
এদিকে নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকার পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক হয়ে পড়ছে। ধসের জেরে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এখনও চালু হয়নি। বাংলা–সিকিমের মধ্যেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সূত্রের খবর, এই আবহে রবিবার পাহাড় সফরে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সমতলে প্রবল বৃষ্টির জেরে একাধিক এলাকায় ধস নেমেছে। ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিকিমেও ভারী বৃষ্টি চলছে। তাই পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। এখন ফুঁসছে তিস্তা–সহ অন্যান্য নদী। তাই নদীপারের বাসিন্দাদের অনেক আগে থেকেই সতর্ক করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মাইকেও প্রচার করা হচ্ছে সরে আসার জন্য।
আরও পড়ুন: ভেঙে পড়া ২৩টি বাড়ি নির্মাণ করবে মেট্রো, বিল্ডিং প্ল্যানের জট কাটাল কলকাতা পুরসভা
অন্যদিকে উত্তরকন্যার মূল প্রশাসনিক ভবনে রাতে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন উত্তরবঙ্গের অবস্থা সঙ্গীন। নাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় পাহাড়ের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। এমনকী তিস্তাবাজার থেকে কালিম্পং যাওয়ার রাস্তা এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার কালিম্পং জেলা প্রশাসন থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আজ, শনিবার টাকিমারি, মালবাজার সাব ডিভিশনের একাধিক এলাকা–সহ জলপাইগুড়ি পুরসভার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তিস্তাপারের বাসিন্দাদের সতর্ক করে মাইকে প্রচার করা হয়।
এছাড়া সিকিমে প্রবল বৃষ্টির জেরে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সিকিমের মঙ্গন চুংথাঙ্গ–সহ নানা এলাকায় ধস নেমেছে। দার্জিলিংয়ের বিজনবাড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি বাড়ি। সেবক থেকে কালিঝোরার পথে একাধিক এলাকায় ধস নেমেছে। আর বিরিকধারা এলাকায় গড়িয়ে পড়ছে বড় পাথরের চাঁই। রাস্তা মেরামতির কাজ জোরকদমে চলছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘন্টায় দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সিকিমের গ্যাংটক, মঙ্গনে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। তাই সেখানে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তিস্তা সংলগ্ন এলাকায়ও বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘুরপথে লাভা হয়ে গ্যাংটক যাওয়ার রাস্তা খোলা আছে। নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে ডুয়ার্সের একাধিক নদী এবং পাহাড়ি ঝর্ণাগুলিতে জলের স্রোত বাড়ছে। দার্জিলিংয়ে আজ শনিবার নতুন করে ধস নেমেছে।