বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয় নাগাড়ে বৃষ্টি। কখনও ভারী আবার কখন অতিভারী বৃষ্টিপাতে সমতলের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তারপর পাহাড়ে নেমেছে ধস। আজ, শুক্রবার পাহাড়–সহ সমতলের বিভিন্ন নদীতে বাড়তে শুরু করেছে জলস্তর। তিস্তা মহানন্দা, তোর্সা, জলঢাকা–সহ একাধিক নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মধ্যে আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে আজ উত্তরবঙ্গজুড়ে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দার্জিলিং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার জেলাগুলিতে আজ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এমনকী লাল সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। এই আবহে মরশুমের প্রথম তুষারপাত দেখা দিয়েছে সিকিমে। উত্তর সিকিমের ছাঙ্গু ও চোপতা ভ্যালি আজ সাদা বরফের চাদরে মুড়ে গিয়েছে।
এই দু’দিকের এই আবহাওয়া দেখে অনেকেই বলছেন, কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ। কারণ শুক্রবার সকাল থেকেই পাহাড় ও সমতলে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আর দুর্গাপুজোর আগে পাহাড়ে পর্যটকের আনাগোনা চলছে। সকালে দার্জিলিংয়ের ম্যালে পর্যটকদের দেখা গেল ছাতা নিয়ে ঘুরতে। তবে পাহাড়–সহ সমতলের ক্রমশ বাড়ছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। কালিম্পং প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পাহাড়ে। ধসের জেরে বিচ্ছিন্ন নানা জায়গা। ধসের পাশাপাশি বিরিকদাড়া, শ্বেতিঝোরার মতো এলাকাগুলিতে পাহাড় থেকে বোল্ডার গড়িয়ে পড়ায় নতুন করে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। মিরিক রোড, দুধিয়া–পানিঘাটা, দার্জিলিংয়ের সুখিয়াপোখরি–সহ কয়েকটি জায়গায় ধস নামায় রাস্তা।
আরও পড়ুন: ‘আমার মক্কেল এখন প্রভাবশালী নন’, পার্থর জামিন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যুক্তি আইনজীবীর
সেখানে সিকিমে বরফ দেখতে ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকরা। মরশুমের প্রথম তুষারপাত দেখে অনেকে সেলফি নিচ্ছেন। আবার শীতের চাদরে মুড়ে প্রকৃতির কোলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ দার্জিলিং থেকে জলপাইগুড়ি ভাসছে। তিস্তায় জল বাড়তে শুরু করেছে। তার জেরে রাজগঞ্জ ব্লক, ক্রান্তি, ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের তিস্তাপাড়ের নিচু এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে। জলপাইগুড়ি শহরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলপাইগুড়ি সদর মহকুমাশাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘তিস্তার পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে শুক্রবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট, জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ ও বিডিওদের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। প্রাথমিকভাবে সমস্ত কর্মীদের হেড কোয়ার্টার না ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এছাড়া কালিম্পংয়ে একাধিক জায়গায় ধস নামার পাশাপাশি বিদ্যুতের পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই গ্রাম তো বটেই শহরের একাধিক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। সবমিলিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে মিরিকে থার্বু এলাকায় ধসের ফলে ভেঙে পড়ল একটি বাড়ি। শিলিগুড়িতেও চলছে নাগাড়ে বৃষ্টি। ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নানা ওয়ার্ড। আগামীকাল ২৮ তারিখ উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। উত্তরবঙ্গের সব জায়গাতেই বৃষ্টিপাত হবে। ইতিমধ্যেই এনডিআরএফ ও সিভিল ডিফেন্সকে নামানো হয়েছে। সেখানে উত্তর সিকিম ঢেকেছে বরফে।