কালিম্পংয়ের চিসাং(Chisang)। ভুটান সীমান্ত থেকে মাত্র ৪ কিমি দূরে ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। ছবির মতো সুন্দর। প্রথমেই জেনে নিন কী করে সেই স্বপ্নের গ্রামে পৌঁছবেন? শিলিগুড়ি থেকে গাড়িতে সোজা সেভক, চালসা, খুনিয়া মোড়, ঝালং, গৈরিবাস, প্যারেন, আপার প্যারেন হয়ে চিসাংয়ে পৌঁছে যেতে পারেন। শিলিগুড়ি থেকে চিসাং প্রায় ১০০ কিমি। সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘণ্টা মতো। তবে এক্ষেত্রে শেয়ার গাড়ি সেভাবে পাওয়া যায় না। প্যারেন থেকে বেশ চড়াই রাস্তা, একটু মানিয়ে গুছিয়ে নেবেন। আর চারপাশে দুচোখ ভরে যা দেখবেন তা পথের কষ্টকে এক ঝটকায় কমিয়ে দেবে অনেকটাই। অনেকে শিলিগুড়ি থেকে বাইকেও যান চিসাং। কিন্তু পাহাড়ি খাড়াই রাস্তায় বাইক চালানোর ঝুঁকি আছে। সেক্ষেত্রে সাবধান। ট্রেনে নিউ মাল জংশনে নেমেও গাড়ি ভাড়া করে আসা যায় চিসাং। দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিমি। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে পৌঁছে যেতে পারবেন নিরিবিলি ছোট্ট গ্রাম চিসাং।
কোথায় থাকবেন চিসাংয়ে? চিসাংয়ে এতদিন একটি মাত্র হোম স্টে ছিল। তবে একটু ওপরে বর্তমানে অপর একটি ফার্ম হাউজ তৈরি হয়েছে। সেখানেও থাকতে পারেন। ২০১৮ সাল থেকে এখানে হোম স্টে চলছে। সার্চ করলেই যোগাযোগের নম্বর পেয়ে যাবেন। মাথাপিছু হাজার দেড়েক মতো খরচ পড়তে পারে। পাহাড়ের কোলে নির্জনে থাকার বন্দোবস্ত। হোমস্টে থেকে একটু বেরিয়ে আসুন। চারপাশে সবুজের বান ডেকেছে। মেঘের আড়ালে ভুটানের Tendu Valley, Nathula Range দেখতে পাওয়া যায়। রাস্তার দুদিকে ফুলের মেলা। ওষধি গাছও চাষ হয় এখানে। আগ্রহ থাকলে জেনে নিতে পারেন কোন গাছের কী কাজ।এখানে শরীর ছুঁয়ে যায় মেঘের দল। এখান থেকে মনাস্ট্রি, দলগাঁও ভিউ পয়েন্টে ঘুরে আসতে পারেন।
বছরের যে কোনও সময়ই আসতে পারেন চিসাংয়ে। তবে সেপ্টেম্বর মাস থেকে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত চিসাং বেড়ানোর ভালো সময়। হাঁসফাঁস গরম থেকে বাঁচতে দুদিনের জন্য কাটিয়ে যেতে পারেন চিসাং। তবে বর্ষায় অবশ্য এখানে অন্য রূপ। কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা পেরিয়ে আসার ঝক্কি যদি সামলাতে পারেন তবে নির্জন চিসাং বর্ষায় যেন আরও আদিম হয়ে ওঠে। আর মার্চ- এপ্রিলে চাঁদনি রাতে এলে তো কথাই নেই। একবার হোমস্টের বাইরে এসে দাঁড়ান। গোটা ভুটানের উপত্যকা জুড়ে আলোর বিন্দু। চরাচর ভাসছে মায়াবী জোৎস্নায়। বাড়ি ফিরেও স্বপ্নে বার বার ঘুরে ফিরে আসবে সেই মোহময়ী রাতে দেখা চিসাং।