শুধু ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের ট্যাবের টাকা নয়, রাজ্য সরকারের আরও একাধিক প্রকল্পের টাকা উপভোক্তার কাছে না পৌঁছে চলে গিয়েছে প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে। তদন্তে নেমে এমনটাই গোয়েন্দারা এমনটাই জানতে পেরেছেন বলে সূত্রের খবর। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কোটি কোটি উপভোক্তার ব্যক্তিগত তথ্যও পৌঁছে গিয়েছে হ্যাকারদের হাতে? এই ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত ২২০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ওদিকে সিপিএমের দাবি, হ্যাকারদের নাম করে টাকা সরাচ্ছে তৃণমূল।
পূর্ব মেদিনীপুরের বর্ধমানের ৪টি স্কুলের ছাত্রদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের টাকা না ঢোকার ঘটনার তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশ। ইতিমধ্যে FIR দায়ের হয়েছে ওই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। আর সেই ঘটনার তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, শুধু ‘তরুণের স্বপ্ন’ নয়, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘কৃষক বন্ধু’, ‘বার্ধক্য ভাতা’সহ রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের টাকা চলে গিয়েছে প্রতারকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। যার টাকা পাওয়ার কথা তিনি দিনের পর দিন বঞ্চিত। সূত্রের খবর, সব ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা সঠিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর সরকারি পোর্টালে আপডেট করেছিলেন। তার পর কী ভাবে তা বদলে গেল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
তদন্তকারীদের দাবি, হ্যাকাররা সরকারি পোর্টালের তথ্য বদলে দিয়ে থাকতে পারে। এখনও পর্যন্ত ২২০টি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সরকারের তরফে চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা পাচার হচ্ছিল। এর মধ্যে ৮৪টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে রাজ্য সরকার। এই অ্যাকাউন্টগুলির মালিক কারা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সব মিলিয়ে প্রতারণার অংক বিশাল বলে মনে করা হচ্ছে। সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, সরকারি পোর্টাল থেকে কি চুরি হয়ে গিয়েছে উপভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্যও?
এই ঘটনায় একযোগে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছে সিপিএম ও বিজেপি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেন, ‘হ্যাকার – ট্যাকার বাজে কথা। এই টাকা তৃণমূল নেতাদের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। পুলিশের ক্ষমতা থাকলে সত্যিটা তদন্ত করে বার করুক।’ বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, ‘গোটা রাজ্যটাই চোরে ভরে গেছে। কেন্দ্রের টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবার এরাজ্যের মানুষদের করের টাকা হ্যাকারের নাম করে চুরি করছে তৃণমূল।’