জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে রাজ্যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে তাদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওদিকে সরকারের প্রকাশিত তালিকাকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা। আর সেই তালিকায় থাকা প্রথম নামের পরিবারই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল সরকারকে। শিবম শর্মা নামে বালুরঘাটের বাসিন্দা ওই শিশুর পরিবার জানিয়েছে, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সঙ্গে তাঁদের বাড়ির ছেলের মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই। শিবমের মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসায় গাফিলতিতে। সেই গাফিলতি ঢাকতেই পরিকল্পনা করে তালিকায় নাম ঢুকিয়েছে প্রশাসন। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে শিশুটির পরিবার।
আরও পড়ুন- হাসপাতালে ভর্তি হয়েও শেষ রক্ষা হল না, গ্রেফতার টালা থানার প্রাক্তন ওসি
পড়তে থাকুন - ‘সন্দীপের গ্রেফতারির খবর পাওয়ায় হয়তো আমাদের সঙ্গে মিটিংয়ের সাহস হয়নি’
শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বালুরঘাটের শিশুর নাম ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকায় দেখে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। প্রশ্ন করেন, আমার জেলায় কোনও মেডিক্যাল কলেজ নেই, তাহলে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জন্য সেখানে কারও মৃত্যু হতে পারে কী করে?
সুকান্তবাবুর মজুমদারের সাংবাদিক বৈঠকের পরেই মুখ খোলে শিবম শর্মার পরিবার। নিহতের পরিবারের তরফে জানানো হয়, গত ১২ অগাস্ট বালুরঘাটের রঘুনাথপুর এলাকায় পথদুর্ঘটনার শিকার হয় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শিবম শর্মা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষার পরও তাকে কোনও চিকিৎসক দেখতে আসেননি। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় শিবমের।
শিবমের আত্মীয় পবিত্র সূত্রধর বলেন, ‘শিবমকে হাসপাতালে ভর্তি করার কয়েক ঘণ্টা পরে চিকিৎসক সেখানে পৌঁছন। চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ আমাদের FIR পর্যন্ত জমা নেয়নি। হঠাৎ দেখি টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন - ‘টালার সুস্থ ওসিকে ভরতি নেয়নি কেন? হাসপাতালের বিরুদ্ধে অ্যাকশনের নিদান দেন মমতা'
নিহত শিশুর দিদি রিংকি শর্মা বলেন, ‘বালুরঘাটে কোনও মেডিক্যাল কলেজই নেই, জুনিয়র ডাক্তার থাকবে কী করে? জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সঙ্গে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা দোষী চিকিৎসকের শাস্তি চাই। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না।’