এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন কার্যত দুয়ারে। আর তার প্রাক্কালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় পদক্ষেপ করলেন। গ্রামীণ এলাকায় পাকা বাড়ি তৈরি করতে গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমোদন লাগে। আর সেই অনুমোদন পেতে বড় অঙ্কের টাকার খেলা চলে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এমনকী জাতপাত ধরে বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এই ছবিটাই এবার বদলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবার থেকে অনলাইনেই মিলবে বাড়ি তৈরির অনুমোদন। এমনকী, অনলাইনেই মিলবে বাড়ির নকশা অনুমোদন থেকে শুরু করে দমকল, বিদ্যুৎ এবং পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র। আর এভাবেই বাড়ি নির্মাণের ছাড়পত্র পাবেন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা।
ঠিক কী অভিযোগ উঠেছিল? গ্রামবাংলায় পাকা বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে চাপে পড়তে হতো প্রচুর মানুষজনকে। অভিযোগ উঠেছিল, মোটা অঙ্কের টাকা দাবি দিয়ে সব অনুমোদন পেতে হতো। কোথাও আবার তা দরদাম করা হতো বলে অভিযোগ। এমনকী অনুমোদন দেওয়ার পিছনে জাতপাতের বিচার করা হতো। এই সব অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছয় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির মাধ্যমে। সেখানে এমন অনেক মানুষ আবেদন জানিয়েছেন যারা বাড়ি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাচ্ছেন না।
কেমন সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী? এই অভিযোগ শুনতে পেয়েই পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাড়ি তৈরির জন্য সব দফতরগুলিকে একছাতার তলায় আনা হচ্ছে। তাতে গ্রামাঞ্চলে বাড়ি বানাতে আর কাউকেই গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসার বা রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারস্থ হতে হবে না। সুতরাং পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়ি নির্মাণ ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগেও রাশ টানা যাবে। একই সঙ্গে বিল্ডিং ফি থেকে সরকারের রোজগার বাড়বে বলে জানা যাচ্ছে।
ঠিক কী বলছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী? এবার বাড়ি তৈরি করতে গেলে গ্রাম থেকে অনলাইনে আবেদন জানালেই হবে। নকশা–সহ কাগজপত্র আপলোড করতে হবে আবেদনের সঙ্গে। অনলাইনে নেওয়া হবে বিল্ডিং ফি। নথি খতিয়ে দেখে বাড়ির নকশা অনুমোদন দেওয়া হবে। বাড়ি শেষের শংসাপত্র থেকে বাস করার অধিকারের শংসাপত্র অনলাইনে ডাউনলোড করা যাবে। এই বিষয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘ভবিষ্যতে কেউ গ্রামে বাড়ি বানাতে গেলে তিনি অনলাইনেই আবেদন জানাতে পারবেন। পঞ্চায়েত দফতর থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সেটার অনুমোদন দেওয়া হবে। তাতে বিল্ডিং প্ল্যান পেতে সুবিধে হবে মানুষের।’