সাধারণ মানুষের চিকিৎসার সুবিধার্থে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, সেই প্রকল্প বড়সড় জালিয়াতি সামনে এসেছে। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের প্রলোভন দেখিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে ৬০-৭০ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব বর্ধমানের জেলা প্রশাসন। এই ঘটনায় আগেই দুজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এবার স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প থেকে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমকে সাসপেন্ড করা হল।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই নার্সিংহোমের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের পাওনা টাকা আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, ‘এ ঘটনায় নজরদারি দলকে আরও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। আচমকা বিভিন্ন নার্সিংহোম পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে অনিয়ম রুখতে গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়, অতিরিক্ত জেলা শাসক (স্বাস্থ্য) ইউনিস রিসিন ইসমাইলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। কাটোয়ার খোসবাগানের যে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে এ দিনের বৈঠকে।
প্রাথমিকভাবে পাঁচ সদস্যের দল এই ঘটনায় তদন্ত করছে। তাদের তদন্তে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪৬ টি কার্ডের কোনও ডিসচার্জ সার্টিফিকেট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেন । এছাড়াও ১৫ টি কার্ড রয়েছে নার্সিংহোমে যেগুলি ব্যবহার করা হয়নি। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, একদিন রোগীকে রেখে সাতদিনের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। এ দিনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা শাসক।
যদিও এ বিষয়ে নার্সিংহোমের কর্তা আবির গুহ মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’ এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে আরও বেশকিছু নার্সিংহোম এবং বেসরকারি হাসপাতালের নাম উঠে এসেছে। সেই সমস্ত হাসপাতালগুলিতে আচমকা হানা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।