২৫শে বৈশাখ তো চলেই এল। এবারের রবীন্দ্র জয়ন্তী একটু অন্যরকমভাবে কাটাতে চান? সেক্ষেত্রে চলে যেতেই পারেন মংপু। রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত মংপু।অনেকে বলেন, এখানে কবি অন্তত চারবার এসেছিলেন। তখন অবশ্য এখনকার মতো ছিল না। তবে মংপু যে পুরোপুরি বদলে গিয়েছে এমনটাও নয়। ছোট্ট পাহাড়ি এই গ্রাম নিজের যৌবনকে নষ্ট হতে দেয়নি এখনও। এখানে এলেই মিলিয়ে নেবেন সেই বিখ্য়াত লেখা কিংবা তথ্যচিত্র, মংপুতে রবীন্দ্রনাথ।
অনেকেই বলেন, আসলে মংপুর প্রেমে পড়েছিলেন কবিগুরুও। প্রথমবার তিনি ১৯৩৮ সালে মংপুতে থাকতে এসেছিলেন। রবীন্দ্র স্নেহধন্য লেখিকা মৈত্রেয়ীদেবীর বাসভবনে দিন তিনেকের জন্য কাটাতে এসেছিলেন কবি। কিন্তু সেবার তিনি ১৬দিন কাটিয়ে গিয়েছিলেন ওই বাড়িতেই। পাশেই সিঙ্কোনার বাগান। সেসবও দেখেছিলেন কবি। পাহাড়ি মানুষ, তাঁদের সহজ সরল জীবন ছুঁয়ে গিয়েছিল কবির মনকে। এরপর আরও কয়েকবার মংপুতে এসেছিলেন কবি। বন্য ফুলের সম্ভার দেখে কবি বলেছিলেন, এ কিন্তু ফুলের রাজ্য, ফুলের দেশ।
এবারের রবীন্দ্রজয়ন্তীতে আপনি ঘুরে আসতেই পারেন সেই ফুলের দেশ, মংপুতে। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। চারদিকে সিঙ্কোনার বাগান মাথা উঁচু করে আছে। পাহাড়ি সরু রাস্তা। সবুজে সবুজ চারদিক। শহুরে কোলাহল থেকে অনেকটা দূরে। নির্জনে একান্তে কাটাতে পারেন। এখানেই রয়েছে রবীন্দ্রভবন। বর্তমানে এটি রবীন্দ্র মিউজিয়াম নামে পরিচিত। তাঁর ব্যবহৃত নানা সামগ্রী সংরক্ষণ করে রাখা আছে। এক অন্যরমক অনুভূতি হবে আপনার। এখানেই কবি লিখেছিলেন তাঁর বিখ্যাত কবিতা, জন্মদিন।
পাহাড়ের উপর প্রায় ৩৭০০ ফুট উচ্চতায় এই পাহাড়ি গ্রাম। দার্জিলিং থেকে দূরত্ব প্রায় ৪১ কিমি। সিটংয়ের একটি অংশ এটি। আপনি সিটংয়ে থেকেও এখানে আসতে পারেন। পেশক রোড ধরে জোড়বাংলো এলাকা পেরিয়ে আপনাকে আসতে হবে মংপুতে। অপূর্ব সুন্দর সেই রাস্তার চারদিক। মন জুড়িয়ে যাবে। তবে কবি যখন এখানে আসতেন তখন পুরো রাস্তা গাড়িতে আসা যেত না। এখন যোগাযোগ ভালো হয়েছে। এখানে পালিত হয় রবীন্দ্রজয়ন্তী।
এখানে কুইনাইন প্রস্তুতিকরণ, অর্কিড সেন্টার, স্থানীয় বৌদ্ধ গুম্ফাতে ঘুরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
এটা কার্শিয়াং মহকুমার মধ্যে পড়ছে। ব্লক হল রংলি-রংলিয়ট। শিলিগুড়ি থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫১ কিমি। কালিঝোরা, রম্ভি বাজার হয়ে মংপু যেতে হয়। এনজেপি থেকে গাড়িতে মোটামুটি আড়াই ঘণ্টায় মংপু পৌঁছে যাবেন।