নিজের মন্তব্যের জেরে ফের বিপাকে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। মুখ্যমন্ত্রী ও মহিলাদের সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করল পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের ঘটনা। গত বুধবার এই খণ্ডঘোষের বেড়ুগ্রামের দিঘিরপাড়ে বিজেপি–র এক সভায় সায়নী ঘোষ, দেবলীনা দত্তদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তাঁদের ‘যৌনকর্মী’ বলে আক্রমণ করেছিলেন সৌমিত্র। যদিও সাংবাদিক সম্মেলনে এ নিয়ে দলের হয়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। কিন্তু তার পরও বিতর্ক রয়ে গিয়েছে।
সেদিন ঠিক কী বলেছিলেন সৌমিত্র? ভরা সভায় নাম করেই বিষ্ণুপুরের সাংসদ বলে ওঠেন, ‘আমি সায়নী ঘোষকে বলতে চাই, তোমরা এ ধরনের কথা বলছ, ধর্মতলায় বসে নাটক করছ। আমরা তো বলছি না, তোমরা যেদিন মসজিদে আজান পড়বে আমরা কিছু খারাপ কাজ করব। কিন্তু তৃণমূলের চাকরের মতো কিছু অভিনেতা–অভিনেত্রীরা বলছে দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন গরুর মাংস খাওয়াবে। আমরা বলতে পারি, দেখুন যে যাঁর ধর্মে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমাদের শিবলিঙ্গকে যাঁরা অপমান করেছে, আমাদের মা মনসাকে যাঁরা অপমান করে তারাই অরিজিনাল যৌনকর্মী বলে আমি মনে করি।’
সৌমিত্রর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানো হয় কলাকুশলী–সহ বিভিন্ন মহল থেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ধিক্কার পোস্ট। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করেই সৌমিত্রকে পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন সায়নী। সৌমিত্র খাঁ নিজে এ ব্যাপারে আর কোনও মন্তব্য না করলেও দলের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি সাংসদরে ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, ‘এই ধরণের মন্তব্য দল সমর্থন করে না।’ যদিও তাতে বিতর্ক এতটুকুও মেটেনি।
এর পরই সৌমিত্র খাঁর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ও মহিলাদের সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ নিয়ে খণ্ডঘোষ থানার দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় এক মহিলা। তাঁর অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, শুধু মহিলাদের নয়, হিন্দু দেবদেবীদের নিয়েও আপত্তিজনক কথা বলেছেন সাংসদ। একইসঙ্গে নিজের বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানিও দিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। এদিকে, তাঁর নামে থানায় এই অভিযোগের ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি বিজেপি সাংসদ।