মৃত্যুর সময়ে কোনও ব্যক্তির অভিব্যক্তির ছবি চড়া বিক্রি করার ছক কষেছিল কালিয়াচক কাণ্ডে ধৃত আসিফ। তদন্তে নেমে এমনটাই অনুমান করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। তবে এখনও পর্যন্ত সেই সংক্রান্ত কোনও ছবি পুলিশের হাতে আসেনি।
কালিয়াচকের আট মাইলের বাসিন্দা ১৯ বছরের আসিফ মা, বাবা, বোন, দিদাকে খুন করে কবর দিয়ে দেয়। কিন্তু দাদা কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে যায়। আসিফকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশি জেরায় আসিফ স্বীকার করেছে, ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে প্রত্যেককে অচৈতন্য করে ফেলে আসিফ। এরপর তাঁদের মুখে সেলোটেপ লাগানো হয়। প্রত্যেকের হাত বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর তাঁদের একে একে ৭০ ফুট উঁচু গুদামঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থাকা চৌবাচ্চার মধ্যে তাঁদের ডুবিয়ে দেওয়া হয়। জলে ডুবে প্রত্যেকের মৃত্যু হয়। কিন্তু ঠিক কী কারণে ঠান্ডা মাথায় প্রত্যেককে খুন করা হল, সেই প্রশ্নই এখন তদন্তকারীদের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে।
প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই হয়ত খুন করে থাকতে পারেন আসিফ। কিন্তু পরবর্তীকালে তদন্তে নেমে পুলিশ হাতে গুদামঘরে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ আসে। সেই সিসিটিভির ফুটেজ থেকেই তদন্তকারীরা অনুমান করছেন, মৃত্যুর সময় মানুষের অভিব্যক্তি কীরকম হয়, তাঁর ছবি ও ভিডিযো চড়া দামে বিক্রি করার ছক কষেছিলেন আসিফ। সেই কারণে পরিকল্পনা করেই নিজের কাছের মানুষকে হত্যা করেছিলেন তিনি। তবে এই বিষয়ে পুলিশ পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না। আসিফের ল্যাপটপটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সেটি পরীক্ষা নিরিক্ষার পরই এই বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, আসিফের ঘর থেকে প্রচুর বৈদ্যুতিন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। ল্যাপটপও পাওয়া গিয়েছে। আসিফ যে খুব ছোট থেকে টেকস্যাভি ছিল, তা তাঁর ব্যবহৃত সামগ্রী থেকেই স্পষ্ট। তবে কী কারণে সে এই নৃশংস হত্যালীলা চালালো, সে খুঁজে বের করাই এখন পুলিশের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।