কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরে দেড় মাসও কাটেনি। তারইমধ্যে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানিতে ফের রেল দুর্ঘটনা ঘটল। বুধবার সকাল ১১ টা ৩০ মিনিট নাগাদ রাঙপানি স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে অয়েল ট্যাঙ্কারের (মালগাড়ি) দুটি বগি। তবে বড়সড় কোনও বিপর্যয় ঘটেনি। যে সময় ওই মালগাড়ি লাইনচ্যুত হয়ে যায়, সেইসময় আশপাশ দিয়ে কোনও ট্রেন আসছিল না। প্রাথমিকভাবে যা খবর মিলেছে, তাতে মালগাড়ির শুধু দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। কেউ হতাহত হননি। তবে সাময়িকভাবে কিছুটা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হবে। আপাতত ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা
গত ১৭ জুন ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানির কাছে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সেদিন সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মেরেছিল মালগাড়ি। তার জেরে মালগাড়ির লোকো পাইলট-সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে মালগাড়ির চালকের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরবর্তীতে সেই তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি (সিআরএস)। রেল পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা গাফিলতির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়।
সিআরএসের রিপোর্টে বলা হয় যে অটোমেটিক সিগন্যাল জোন পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধাপে যে গাফিলতি আছে এবং লোকো পাইলট ও স্টেশন মাস্টারদের অপর্যাপ্ত কাউন্সেলিংয়ের অভাবে এরকম দুর্ঘটনা 'অপেক্ষা করে আছে'। সেইসঙ্গে অত্যন্ত অগ্রাধিকারের সঙ্গে 'অটোমেটিক ট্রেন-প্রোটেকশন সিস্টেম' (কবচ) চালুর সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টে।
হাওড়া-মুম্বই মেলের দুর্ঘটনা
মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের রাজখরসাওয়ান এবং বরাবাম্বুর মধ্যে লাইনচ্যুত হয়ে যায় ১২৮১০ হাওড়া-ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস এক্সপ্রেস। তার জেরে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।
সেই দুর্ঘটনার বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ট্রেনের ম্যানেজার মহম্মদ রেহান জানান যে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ছুটছিল মুম্বই মেল। যে লাইনে মুম্বই মেল যাচ্ছিল, তার পাশের লাইনে আগেই একটি মালগাড়ি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছিল। সেটারই কোনও বগিতে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয়ে যায় মুম্বই মেলের ১৮টি বগি।
মুম্বই মেলের দুর্ঘটনার জেরে বাতিল ট্রেন
হাওড়া-মুম্বই মেলের দুর্ঘটনার জন্য মঙ্গলবার ২৭টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। বুধবারও কমপক্ষে চারটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও কয়েকটি ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। কোন কোন ট্রেন বাতিল করা হল, তা দেখে নিন -
১) ০৮১৬৩/০৮১৬৪: চক্রধরপুর-রৌরকেল্লা-চক্রধরপুর স্পেশাল (৩১ জুলাই)।
২) ১২৭৬৮ সাঁতরাগাছি-নান্দেদ এক্সপ্রেস (৩১ জুলাই)।
৩) ০৮৬০২ হাতিয়া-টাটানগর স্পেশাল (৩১ জুলাই)।
৪) ০৮১৯৫ টাটানগর-হাতিয়া স্পেশাল (১ অগস্ট)।
৫) ১৮১৯০ এর্নাকুলাম-টাটানগর এক্সপ্রেস (১ অগস্ট)।