বাংলায় লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর হানা বেড়েই চলেছে। কখনও হাতি বা কখনও বাইসনের হামলার হতাহতের ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে। আর এবার গন্ডারের হানায় আহত হলেন এক ব্যক্তি ঘটনাটি ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পানবাড়ি জলঢাকা নদীর চড়ে ঘটেছে। গন্ডারের হানায় গুরুতর আহত হয়েছেন নাম কালাতু রায় (৫৮) নামে ওই ব্যক্তি। তাকে চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লোকালয়ে গন্ডারের অবস্থানে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বছর ৪০ পরে! অসমের পুরনো জঙ্গলে ফিরল গন্ডার
জানা গিয়েছে, জলঢাকা নদীর চড়ে গরু থেকে শুরু করে অন্যান্য গবাদি পশু চড়িয়ে সেখানে গরু চড়াতে গিয়েছিলেন। তারপরেই ঘটে বিপত্তি। তার ওপর আচমকা হামলা চালায় গন্ডার। তার জেরে অনেকটাই দূরে ছিটকে পড়েন কালাতু। তখন তার চিৎকার শুনে অন্যরা সেখানে ছুটে আসেন। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়।
জানা গিয়েছে, এটি হল মা গন্ডার। একটি শাবক রয়েছে তার। দুই গন্ডারের লড়াইয়ের হাত থেকে নিজের শাবককে বাঁচাতে মাঝেমধ্যেই লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসছিল গন্ডারটি। তবে প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গোরুমারা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে শাবক–সহ এই মা গন্ডার নাথুয়া রেঞ্জের বনাঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছে।বন দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, কয়েকদিন ধরে গোরুমারার জঙ্গলে দুই পুরুষ গন্ডারের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। সেই কারণেই বেশ কয়েকটি গন্ডার গোরুমারা সাউথ রেঞ্জের বুধুরাম বিটের বনাঞ্চল ছেড়ে পাশ্ববর্তী এলাকার জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। সেরকম এই মা গন্ডারটিও আশ্রয় নিয়েছে।
তারপর থেকেই মাঝেমধ্যেই লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসছে গন্ডারটি। তা নিয়ে বেশ আতঙ্কে ছিলেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, এবিষয়ে বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও গন্ডারটি জঙ্গলে পাঠানোর জন্য কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তব বন বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে নিয়মিত নজরদারি রাখা হয়েছে। তারপরেও কেন এই হামলা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তবে হামলার বিষয়ে আধিকারিকদের দাবি, সাধারণ মা গন্ডার শাবকদের সুরক্ষার বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক থাকে। ওই ব্যক্তি গন্ডারের কাছাকাছি চলে আসায় সেটা মা গন্ডারের কাছে শাবকের জন্য বিপজ্জনক মনে হয়েছিল। সেই কারণেই এই হামলা হয়ে থাকতে পারে।